আমাদের ভারত, নদিয়া, ৩ জানুয়ারি: “কথা না শুনলে দ্বিতীয় অভয়া ঘটিয়ে দেব,” মহিলা চিকিৎসককে হুমকি সরকারি হাসপাতাল সুপারের। চরম আতঙ্কে অবশেষে স্বাস্থ্য দপ্তর এবং পুলিশের দ্বারস্থ ওই মহিলা চিকিৎসক। ঘটনাটি নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের। ওই মহিলা চিকিৎসকের নাম সুকন্যা রায়। গত তিন মাস আগে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্যাথলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে কাজে যোগদানে।
তাঁর অভিযোগ, কাজে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের সুপার ডক্টর তারক বর্মন তার ওপর বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন। তাঁর অভিযোগ, তিনি প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের কাজ করলেও তাকে বল প্রয়োগ করে এমার্জেন্সিতে কাজ করাতো। পাশাপাশি নাইট ডিউটি জোর করে করানো হতো তাকে দিয়ে। তিনি প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে হুমকি দেওয়া হতো। পাশাপাশি তিনি যখন নাইট ডিউটি করতে অস্বীকার করেন তখন তাকে দ্বিতীয় অভয়া কান্ড হওয়ার হুমকি দেন। এরপরেই রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ওই মহিলা চিকিৎসক। অবশেষে তিনি নিরুপায় হয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর এবং থানার দ্বারস্থ হন। শান্তিপুর থানায় অভিযুক্ত তারক বর্মনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি চাইছেন অবিলম্বে তাকে যেন এই হাসপাতাল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করে স্বাস্থ্য দপ্তর।
তবে ওই মহিলা চিকিৎসকের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিপুর হাসপাতালের সুপার তারক বর্মন। তিনি বলেন, ওই মহিলা চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পাশাপাশি তিনি বলেন, এ বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে যা বলার জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে বলবেন।
অন্যদিকে ওই মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য অধিকারীক জ্যোতিষ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, আমি ওই মহিলা চিকিৎসকের অভিযোগ হাতে পেয়েছি। ইতিমধ্যেই তা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠিয়েও দিয়েছি। তবে ওই মহিলা চিকিৎসক নিজেও মানসিক রোগের ওষুধ খান। আমি জানিয়েছি ওই চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দপ্তর অন্যত্র স্থানান্তরিত করলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা সোমনাথ কর বলেন, আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো পুরো বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। তিনি আরো বলেন, এই প্রথম নয়, এই থ্রেট কালচার দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে। যারা চিকিৎসকদের উপরে বস হয়ে বসে আছে তারা রীতিমত জুনিয়রদের এই ভাবেই থ্রেট করে।