আমাদের ভারত, ৭ এপ্রিল: দেশের আইন না মানতে পারলে বাংলাদেশে যান। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উপেক্ষা করে চাকরিহারা শিক্ষকদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশকে কটাক্ষ করে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন সুকান্ত মজুমদার। মমতার এই মন্তব্যকে ললিপপ বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তাঁর কথায় ললিপপে ভুললে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতি হবে বলে সাবধান করেছেন তিনি।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “ভারতবর্ষের শীর্ষ আদালত, তাকে আপনি অবমাননা করছেন। কোর্টের রায় মানি না বলছেন। মামার বাড়ির আবদার নাকি? ভারতের সংবিধান মানবেন না, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মানবেন না। আর মধু খাবেন ভারতে। এটা তো চলতে পারে না। মামা বাড়ির আবদার করতে হলে বাংলাদেশে যান। ভারতে থাকতে হলে এখানকার সংবিধান, আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে মানতে হবে।
৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি রয়েছে। যে মামলার শুনানির পর মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর পুরো মন্ত্রিসভা জেলে যাবেন বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে ভুল করেছেন। না ওটা আপনার ভুল নয়। আপনি চুরি করেছেন। অযোগ্যদের বাঁচাতে এবং যোগ্যদের টপকে আপনার লোকেদের চাকরি দিতে ওই সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি করেছিলেন।” তিনি বলেন, “আমার দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা আছে। আগামীকালের শুনানির পর আপনি ও আপনার পুরো মন্ত্রিসভা জেলে যাবেন।”
আজ যোগ্য চাকরিহারাদের উদ্দেশ্যে সুকান্ত মজুমদার বলেন, যারা চাকরি হারিয়েছেন, তারা মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। এই মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনলে আপনাদের ভবিষ্যৎ শেষ। আপনারা ললিপপে ভুলে যাবেন আর ভবিষ্যতে আরো দুর্নীতি হবে।
রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই মুখ্যমন্ত্রী বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। আগামী কতগুলি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ উনি অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছেন কেউ জানে না। স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শিক্ষক নেই। গত দু’বছরে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে আপনার আমার গরিব বাড়ির ছেলে মেয়েদের খাতা যারা দেখেছেন তারা অযোগ্য।
মুখ্যমন্ত্রীর যোগ্য চাকরিহারাদের নিয়ে বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, “আমি অবাক হয়ে গেলাম এই কান্ডের মূল কারিগর আপনার ভাইপো কেন আজকে মঞ্চে ছিলেন না? তার তো বেশি করে আপনার পাশে থাকা দরকার ছিল। কালীঘাটের কাকু কাদের নাম নিয়েছেন? পার্থ বেশি লোভী ওকে ২৫ কোটি দিতে হবে। অভিষেক নাম নিয়েছেন। এই অভিষেক কে? বন্দ্যোপাধ্যায়, চট্টোপাধ্যায় নাকি বচ্চন?”
চাকরি চুরির অভিযোগে বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও নিশানা দাগেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, রাজের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, আমার কোটার চাকরি তৃণমূলের ছেলেদের দেব। কার কী করার আছে? আমি প্রশ্ন করতে চাই, এই কোটা কোথা থেকে তৈরি হয়? কে দেন এই কোটা? তারপরও উনি শিক্ষা মন্ত্রী পদে থেকে যান কী করে।