আমাদের ভারত, ১ এপ্রিল: ভোট প্রচারে বেরিয়ে আবারো চাঁচাছোলা ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ শানালেন দিলীপ ঘোষ। এই গরমে আরো বেশি করে ভোটের তাপ ছড়িয়ে দিলেন বর্ধমান- দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী। দুর্গাপুরের বিধান নগরের স্যান্ট্রোসের মাঠে প্রাতঃভ্রমণ করে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের সামনে হুঙ্কার দিয়ে ঘোষণা করলেন মেদিনীপুরের মাফিয়া রাজ তিনি শেষ করেছেন। বর্ধমান দুর্গাপুরেও মাফিয়া রাজ তিনিই শেষ করবেন।
প্রতিপক্ষ কীর্তি আজাদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দ্যেশ্যে বললেন, বাঁচকে রেহানা রে বাবা, টিএমসি’সে বাঁচকে রেহানা রে। তিনি বলেন, “তৃণমূল এত নিচে নেমেছে যে বাঁচার কোনো রাস্তা নেই তাদের কাছে। বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কোন সাত সমুদ্র তের নদীর পার থেকে এসেছেন। বর্ধমান- দুর্গাপুর সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এখানকার লোক তার সম্পর্কেও কিছুই জানেন না। তিনি কিভাবে অ্যাটাক করছেন, গালাগালি দিচ্ছেন আমাকে। তিনি বুঝে গেছেন তৃণমূল করতে গেলে ছোটলোক হতে হবে। তাই সেই রকমই ব্যবহার করছেন। তার পরিণাম কি হল? পার্টির লোকেরা এমন তাড়া করল যে তাকে মন্দিরে গিয়ে লুকাতে হলো।”
বাম প্রার্থী রাজনীতিতে কু-কথা না বলার পক্ষে একাধিক মন্তব্য করেছেন। সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,”সুকৃতি ঘোষাল ভালো ভদ্রলোক, মাস্টারমশাই লোক। কিন্তু তার পুরনো নেতাদের কথা তিনি মনে করুন। কী রোয়াব ছিল তাদের। কী ভাষায় কথা বলতেন? বর্ধমানের নেতারাই কী কী কথা বলতেন। আমি মেদিনীপুরের ছেলে, ওখানে সিপিএমের হাতে কত লোক মার খেয়েছে, কত লোককে পুঁতেছে। আপনাদের এখানে খুঁড়লে কয়লা বের হয়। মেদনীপুরের মাটি খুঁড়লে হাড়গোড় বের হয়, বন্দুক বের হয়।”
রবিবার প্রচারে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপিকে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য করবেন। এর পাল্টায় দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি এবার কালীঘাটে বন্দি হয়ে যাবেন। কেউ দিদিও বলবে না, পিসি ও বলবে না।”
নিজের কেন্দ্রে জেতার বিষয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী দিলীপ ঘোষ বলেন, আলু ওয়ালাজী মাত্র ১৫ দিন সময় পেয়েছিল। দুর্গাপুরের মানুষকে ধন্যবাদ জানাবো। বর্ধমানে ভোট না পাওয়ায় যে গ্যাপটা ছিল সেটা দুর্গাপুর পূরণ করেছিল তার সময়, তিনি জিতেছিলেন। আমি সেই জন্যই ওই দিক থেকে শুরু করেছি। এটা তো (দুর্গাপুর) আমাদেরই গড়। এখানে আমাদের এমএলএ আছে। আমি ১৯৯৬ থেকে সংঘের প্রচারক হিসেবে বহুবার এসেছি। এখানকার গলি গলি সবটাই আমার চেনা। কিন্তু ভাতার বা মন্তেশ্বরের মতো টেরোর জায়গাগুলোতে এখনও মারপিট হচ্ছে। আমি সেখানে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছি। ওখানে এমএলএ’র পাড়ায় পাঁচ বছর ধরে কোন পার্টিকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখানে ঢাক ঢোল নিয়ে আমরা ঢুকেছি।” তাঁর হুঙ্কার, দিলীপ ঘোষকে আটকাবার মতো দম থাকলে আটকা। আমি ঐ সমস্ত জায়গায় যাব। মেদনীপুরের মাফিয়া রাজ আমি শেষ করেছি। বর্ধমান- দুর্গাপুরের মাফিয়া রাজও আমিই শেষ করব।
রোজকার মতই হোটেল থেকে বেরিয়ে প্রাতঃভ্রমণে বিধান নগরে স্যান্ট্রোসের মাঠে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে মাঠ প্রদক্ষিণ করে আরএসএস শাখা কর্মীদের সঙ্গে প্রার্থনাও সারেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের উদ্দেশ্যে আবারো হুঁশিয়ারি দেন দিলীপ ঘোষ। এরপর চা পানে মিলিত হন। তারপর মাইকে ভাষণে নিজস্ব স্টাইলে ধুয়ে দেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। শাসক দলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি ডায়লগ কম মারি। হাত-পা বেশি চালাই। তৃণমূলের নেতাদের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, আগে টিএমসি সামলা, তারপর দেখবি বাংলা।