নিখোঁজ ডায়েরি করতে নাস্তানাবুদ হয়েছি, বললেন হায়দ্রাবাদের ধর্ষিতা তরুণী চিকিৎসকের বাবা

আমাদের ভারত,৩০ নভেম্বর:বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেছে মেয়ের কোন খবর নেই। ফোনটা সুইচড অফ। আর বাড়িতে বসে থাকতে পারেন নি ওই তরুণী পশু চিকিৎসকের বাবা। তারা খুঁজতে শুরু করে তাদের মেয়েকে। টোল প্লাজায় না পেয়ে, প্রথমে পুলিশের দ্বারস্থ হন তারা। কিন্তু শুধুমাত্র নিখোঁজ ডায়েরি করতেই তরুনীর পরিবারকে এ থানা থেকে ও থানা, ও থানা থেকে সে থানা বেশ কিছুক্ষণ শুধু ঘোরাঘুরি করতে হয়েছিল সেই রাতে। ঘটনাস্থল তাদের এলাকায় পরে না বলে সব থানাই প্রথমে নিজেদের দায় এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল। পুলিশকে দিয়ে মেয়ের নিখোঁজ ডায়েরি করানোর কাজটা যে কতটা কঠিন তা হাতেনাতে টের পেয়েছেন ওই ধর্ষিতার পরিবার।

যদিও তেলেঙ্গানা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই ঘটনার দায় চাপিয়ে দিয়েছিলেন তরুণী চিকিৎসকের উপরেই। তার প্রশ্ন ছিল রাতের বেলায় বিপদে পড়ে ওই তরুণী কেন বোনকে ফোন করেছিল? কেন সে পুলিশকে ফোন করে ডাকেনি? অথচ সেই রাতে পুলিশই ওই নিখোঁজ তরুণীর ডায়েরি নিতে টালবাহানা করেছে।

বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদের কিছুটা দূরে একটি কালভার্টের নিচে একটি তরুণী পশুচিকিৎসকের অর্ধ দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায় তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। হায়দ্রাবাদের কিছুটা দূরে মফস্বল এলাকা সামসাবাদের টোলপ্লাজায় বুধবার রাতে ওই তরুণী চিকিৎসকের স্কুটারের পেছনের চাকা ফেটে যায়। বিপদে পড়ে তরুণী ফোন করেছিল তার বোনকে। তরুণীর পরিবারের তরফে জানানো হয় রাত সোয়া নয়টার সময় তরুণীর সঙ্গে শেষ কথা হয় তার বোনের। তারপর থেকে তরুনীর মোবাইল সুইচট অফ হয়ে যায়। তরুনীর বাবা বলেছিলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম হয়তো ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু রাত দশটা বেজে যেতেই আমাদের দুশ্চিন্তা শুরু হয়। বাড়িতে আর বসে থাকতে পারেনি। ছুটে যাই টোলপ্লাজায়। গিয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজেও না পেয়ে, শেষে পুলিশের দ্বারস্থ হই। যাই একটি কাছের থানায়। থানা থেকে জানানো হয় টোলপ্লাজা তাদের এলাকায় পড়ে না। তখন যাই আরও একটি থানায়। তারাও একই কথা বলেন। নিখোঁজ ডায়েরি করতে এভাবে এক থানা থেকে অন্য থানা ঘুরে বেড়াই আমরা। মেয়েকে খুঁজে বার করতে আমি দুজন কনস্টেবল এর সাহায্য চেয়েছিলাম‌ কোন থানায় ডায়েরি নিতে রাজি হচ্ছে না দেখে শেষমেষ রাত তিনটে নাগাদ আমি একাই রাস্তায় রাস্তায় খুঁজতে শুরু করি মেয়েকে।

অথচ ওই ঘটনার পরই তেলেঙ্গানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ আলি ঘটনার দায় চাপিয়ে ওই তরুণীকে অভিযুক্ত করেছিলেন। তার মন্তব্যে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে।

তরুনীর বোন জানায় রাত দশটার পর সে তার অফিস থেকে বেরিয়ে এক সহকর্মীকে সাথে নিয়ে টোল প্লাজা এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু বোনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার তেলেঙ্গানার ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি কালভার্টের নিচে থেকে ওই তরুণী চিকিৎসকের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তরুণীর বাবা এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তার আবেদন কোনো আইনজীবী যেন ওই ধর্ষকদের পক্ষে লড়াই না করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *