আমাদের ভারত, ২০ সেপ্টেম্বর: তিরুপতির লাড্ডু বিতর্কে দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে এখন তোলপাড় প্রায় সারা দেশ। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর লাড্ডুর দাবিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। গুজরাটে সরকারি একটি ল্যাবের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনে তিনি দাবি করেছিলেন, তিরুপতির প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি মেশানো হয়েছে। এবার এই দাবিকে সামনে রেখে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে বলে মামলা হলো দেশের শীর্ষ আদালতে।
শুক্রবার এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি মিশিয়ে হিন্দু মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। অগণিত ভক্ত যারাই প্রসাদকে পবিত্র আশীর্বাদ হিসেবে গ্রহণ করেন তারা মানসিকভাবে আহত হয়েছেন। আবেদনকারী জানিয়েছেন, লাড্ডু বিতর্কে মন্দির প্রশাসনের গাফিলতি হয়েছে। হিন্দু ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার্থে পদক্ষেপ করা উচিত।
এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর একটি দাবিকে কেন্দ্র করে। তিনি গুজরাটে সরকারি একটি ল্যাবের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনেন। রিপোর্টটি জুলাই মাসের। সেই রিপোর্টকে সামনে রেখে চন্দ্রবাবু দাবি করেন, তিরুপতি প্রসাদের লাড্ডুতে ব্যবহৃত ঘি- এর সঙ্গে মেশানো হয়েছে পশুর চর্বি। ঘটনার জন্য চন্দ্রবাবু এবং তার ডেপুটি জনসেনা পার্টির প্রধান পবন কল্যাণ দায়ী করেছেন তাদের পূর্বতন জগনমোহন রেড্ডি সরকারকে। বুধবার চন্দ্রবাবুর এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে শোরগোল পড়ে
যায়। শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। তেলেগুদেশম পার্টি এবং জনসেনা পার্টি ছাড়াও বিজেপিও বিষয়টি নিয়ে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায়। কিভাবে মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে পশুর চর্বি মিশিয়ে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা করা হয়েছে? আইনি পদক্ষেপের দাবি উঠেছে। ইতিমধ্যেই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। চন্দ্রবাবুর কাছে বিষয়টির বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা।
তবে এ বিষয়ে জগনমোহনের দল ওয়াই আর কংগ্রেস পাল্টা চন্দ্রবাবু সরকারকে দায়ী করেছ। মন্দিরের পবিত্রতা নষ্টের জন্য চন্দ্র বাবুকে পাল্টা দায়ী করেছেন তারা।
তিরুপতি শহরে ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের প্রসাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এক বিশেষ শ্রীভরি লাড্ডু। প্রতিদিন বিশ্বের নানা প্রান্তে ভক্তদের কাছে তা পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকেন তিরুপতি মন্দির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্বপ্রাপ্ত তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থান ও কর্তৃপক্ষ। লাড্ডু নিয়ে বিতর্ক শুরুর পর এবার তা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ালো।