আমাদের ভারত, ১৩ জুলাই: শনিবার গণনা শুরু হতেই চার কেন্দ্রে এগিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পোস্টাল ব্যালট থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি রাউন্ডে গণনা শেষে তৃণমূল প্রার্থীরা তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীদের থেকে ব্যবধান বাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে শেষ হাসিও তারা হেসেছেন। রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনের চারটিতেই তৃণমূলের জয়ের ফলে বিধানসভায় তাদের শক্তি বৃদ্ধি হল।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তিনটিতে একে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। একুশে নির্বাচনের ফল অনুযায়ী কেবল মানিকতলাতেই জিতেছিল তৃণমূল। বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ, রায়গঞ্জ ছিল বিজেপির দখলে। ২৪- এর লোকসভা নির্বাচনেও সেই ফল অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু উপনির্বাচনের ফলে দেখা গেল বিজেপির দখলে থাকা তিনটি বিধানসভায় বিপুল ব্যবধানে জিতেছে রাজ্যের শাসক দল। বাগদা বিধানসভায় ৩৩ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের মধুবর্ণ ঠাকুর, রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূলের মুকুটমণি অধিকারী জয়ী হয়েছেন ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোটে। বিজেপির দখলে থাকা রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী, আর সবাইকে চমকে দিয়ে মানিকতলা আসনে ৬০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছে সাধন জায়া সুপ্তি পান্ডে।
রায়গঞ্জে জয় ঘোষণা হতেই বিজয় মিছিল শুরু করে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। গণনা শুরুর আগেই মানিকতলার বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবে অভিযোগ করেন, তাঁর কেন্দ্রের অন্তত ৮০ শতাংশ বুথে রিগিং হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে ফল কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। অন্যদিকে বাগদায় গণনা কেন্দ্রের কাছে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ তথা জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি গণনা কেন্দ্রে কারচুপি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন সংখ্যা কমে ১৮ থেকে ১২ হয়েছিল। বিধানসভায় বিজেপির আসন সরকারিভাবে তিনটি কমে গেল। কারণ এই তিন কেন্দ্রের বিধায়করা বিধানসভা নির্বাচনের পরে ধীরে ধীরে তৃণমূলের পথে পা বাড়িয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বাইয়ে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে ২০২১- এর পুরনো ছবি বারে বারে সম্প্রচারের অভিযোগ করে উপনির্বাচনে প্রভাব ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু সেই সব কিছুই উপনির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, তা তার ফলাফল থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তৃণমূলের তরফে এই চার কেন্দ্রে জয়ের জন্য সেখানকার মানুষকে অভিনন্দন জানা জানানো হয়েছে। বিজেপির তরফে বলা হয়েছে খুব তাড়াতাড়ি এই পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে।