স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ৬ ডিসেম্বর:
জি বাংলার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান দাদাগিরির দাদা বাংলার মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রিয় শতবর্ষ অতিক্রম করা বৃদ্ধ গঙ্গাধর বিশ্বাস আজ চলে গেলেন অজানা দেশে। মৃত্যুর আগে গঙ্গাধরবাবু তাঁর সাত ছেলে তিন মেয়ে সহ নাতি-নাতনিদের কাছে মনের শেষ ইচ্ছা জানিয়ে রেখেছিলেন৷ সেইমত হল তাঁর শবযাত্রা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ১০৫ বছর৷
শান্তিপুর ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নৃসিংহপুর বাবলাবন এলাকার গঙ্গাধর বিশ্বাস ১০০ বছর অতিক্রম করার পরই জি বাংলার অন্যতম এপিসোড দাদাগিরিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন ২০১৬ সালে। সেখানে তৃতীয় স্থান অধিকার করে চমক দিয়ে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। এছাড়াও দাদাগিরির মঞ্চে ওঠার আগেই জি বাংলার টিম তাঁর বাড়িতে আসে তাঁর কাজকর্ম দেখতে৷ ১০০বছর বয়সেও মাঠে কাজ করা, পুকুরে মাছ ধরা সহ নিজের ব্যবসার কাজে গঙ্গাধর বিশ্বাস যুক্ত থেকেছেন৷ অত্যন্ত পরিশ্রমী হওয়ায় দাদাগিরির মঞ্চে দাদা অর্থাৎ সৌরভ গাঙ্গুলির মন জয় করেছিলেন৷
গঙ্গাধরবাবু দাদাগিরির মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন বয়সকে নিয়ে চিন্তা করলে হবে না, সঠিকভাবে শরীরচর্চা করলে শরীরে কোনও রোগ জন্মাবে না অর্থাৎ প্রত্যেকেরই দীর্ঘদিন বাঁচা সম্ভব যদি সে নিয়মিত শরীরচর্চা করে। মৃত্যুর অনেক আগে গঙ্গাধরবাবু তাঁর পরাবারের কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যে, তাঁর মৃত্যুর পর যেন তাঁকে মাইক, কীর্ত্তন, ব্যান্ড বাজিয়ে নদীয়ার মাটিতে শান্তিপুরের নৃসিংহপুরের শ্মশানঘাটে কাঠের চুল্লিতেই তাঁকে দাহ করা হয়৷ সেই মতো ৬ই জানয়ারি বুধবার গঙ্গাধরবাবুর মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছে রাখতেই গ্রামের প্রায় ৫০০ লোক কাঠের পালকি ফুল, মালা, দাদাগিরির স্মারক দিয়ে সাজিয়ে ব্যান্ড পার্টি এবং মাইকে কীর্তন বাজাতে বাজাতে ১০৫ বছর বয়সী গঙ্গাধর বিশ্বাসের মরদেহ নিয়ে যায় শ্মশানঘাটে। প্রসঙ্গত বছর দুয়েক আগে শান্তিপুরের ভারতভূক্তি দিবস ১৮ই আগষ্ট শান্তিপুরের ডাকঘরে তিনিই প্রবীন মানুষ ভারতবর্ষের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ৷