সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৯ জুন:
বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বনবিভাগের লটিহিড় জঙ্গলে বন্যপ্রাণী বিচরণ ক্ষেত্র থেকে উচ্চ ক্ষমতার পথবাতি সরিয়ে ফেললো বাঁকুড়া জেলা পরিষদ ও বনদপ্তর। এই উদ্যোগে খুশী হয়ে জেলা পরিষদের বন কর্মাধ্যক্ষ চিত্ত মাহাতো ও বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বিভাগের আধিকারিকে অভিনন্দন জানান পরিবেশবাদীরা।
পরিবেশবাদীরা জানান, সম্প্রতি দু’নম্বর রাজ্য সড়কের ধারে বন্য প্রাণী যাতায়াতের জায়গায় বেসরকারি বিলাসবহুল এক হোটেল কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়িক স্বার্থে প্রায় ২৫টি উঁচু আলো স্তম্ভ লাগিয়েছিল। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের লটিহীড় জঙ্গলে বন্য প্রাণী যাতায়াতের রাস্তায় বেআইনি ভাবে বসিয়েছিল এই পথবাতি। এনিয়ে বনদপ্তর ও পরিবেশবাদীরা সরব হয়ে উঠেছিল। অবশেষে বনদফতর তুলে ফেলল সেই বাতি। বনদফতরের নজর এড়িয়ে কিভাবে বন্যপ্রাণীর চলাচলের রাস্তায় এমন উচ্চ ক্ষমতার আলোক স্তম্ভ বসানো হল তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। অবশেষে বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা ঝটিকা অভিযান চালিয়ে একে একে সমস্ত বাতি স্তম্ভ তুলে ফেলে।বনবিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমতি নিয়েই বাতি বসানো হয়েছিল বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানালেও তারা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
পরিবেশবাদী সংস্থা মাই ডিয়ার ট্রিজ অ্যান্ড ওয়াইল্ডসের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ২৫ ফুট উঁচুতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাতি লাগানোর প্রভাব বন্যপ্রাণীর ওপর পড়া খুব স্বাভাবিক। এতে পাখিরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ও বংশবিস্তারে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এই বনভূমি বন্যপ্রাণীদের বিচরণ ভূমির মধ্যে পড়ে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদে গিয়ে তারা কর্মাধ্যক্ষকে বিষয়টি জানান।
এবিষয়ে কর্মাধ্যক্ষ চিত্ত মাহাতো জানান যে, তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বন স্থায়ী সমিতির দায়িত্ব ভার নেওয়ার পর থেকে জেলার সবুজ ও জীব বৈচিত্র রক্ষা এবং বনভূমির পরিবেশ রক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে চলেছেন। বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীদের একাজে তিনি খুশি।বনভূমি, সবুজ, বন্যপ্রাণ ও সেখানকার পরিবেশ রক্ষায় তিনি কোনরকম আপোষ করবেন না বলে জানান।