Eviction, Kamala village, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে এসেছে উচ্ছেদের নোটিস, দুশ্চিন্তায় শালবনীর কমলা গ্রামের বাসিন্দারা

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ ডিসেম্বর: ছোট জনবসতির পাশেই ইংরেজ সরকার এয়ারপোর্ট তৈরি করেছিল। পরবর্তী সময়ে সেই বসতি বড় গ্রামে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সেই গ্রামের বাসিন্দাদের ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্ক তাড়া করছে। ইতিমধ্যেই গ্রামে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে উচ্ছেদের নোটিস এসেছে। এতে সমস্যায় পড়েছে ৩০০-র বেশি পরিবার। শালবনী ব্লকের বাঁকিবাঁধ পঞ্চায়েতের কমলা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, নোটিস পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৪০ সাল নাগাদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কমলা এলাকায় এয়ারপোর্ট তৈরি করেছিল ইংরেজরা। মূলত যুদ্ধের সুবিধার জন্য এয়ারপোর্টটি তৈরি করা হয়। ১৯৪২ সালে ৬ মাসের নোটিস দিয়ে ইংরেজরা জানায়, বোমা-গুলি চলতে পারে। এরফলে বিপদে পড়বে গ্রামবাসীরা। তাই অস্থায়ীভাবে তাঁদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যুদ্ধ মিটে গেলে গ্রামবাসীরা পরে ফের নিজেদের ভিটেতে ফিরে আসেন। ইংরেজ বিতাড়নের পর তাদের পরিত্যক্ত এয়ারপোর্টের জমিতে তৈরি হয়েছে টাকা ছাপানোর টাঁকশাল। তার এক পাশেই তৈরি হয়েছে কোবরা বাহিনীর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। আরও কিছুটা দূরে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি তৈরি হয়েছে। ধীরে ধীরে কমলা গ্রামের বাসিন্দাদের আর্থিক সুদিন ফিরতে শুরু করেছিল। ২০২২ সালে এই গ্রামের বাসিন্দাদের উচ্ছেদের কথা জানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেই সময় গ্রামবাসীরা প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অফিসেও গিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি।

গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, পাঁচ পুরুষ ধরে এই এলাকায় তারা বসবাস করছেন। এখন বলছে উচ্ছেদ করে দেবে। পরিবারগুলি কোথায় যাবে? ভিটেমাটি হারালে কোথায় যাব? আমাদের কথা ভাবতে হবে। জমি অধিগ্রহণ হলে, আরও দু’-তিনটি গ্রামের মানুষ সমস্যায় পড়বে।

এই ব্যাপারে মেদিনীপুর সদর মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখার্জি বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। প্রশাসনিক স্তরে এই ব্যাপারে কোনও কিছুই জানানো হয়নি প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে। আগে জায়গাটি সার্ভে করে দেখা হোক জায়গাটি কাদের, তারপর প্রশাসনের উদ্যোগে কিছু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *