সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৭ জুলাই: ভরা শ্রাবনেও পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই, আকাশের পানে চেয়ে
বাঁকুড়ার কৃষকরা। আমন চাষের সময় ক্রমশ পেরিয়ে যেতে উদ্বিগ্ন কৃষকরা তাকিয়ে ছিল ডিভিসির দিকে।অবশেষে আজ থেকে জল ছাড়তে শুরু করেছে ডিভিসি।আশায় বুক বাঁধছে চাষিরা।
ভরা বর্ষাতেও বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমি বন্ধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নিম্নচাপের জেরে গত ২ দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও এখনো ভারি, এমনকি মাঝারি বৃষ্টির দেখা মেলেনি বাঁকুড়ায়। গত কয়েক দিন ধরে আকাশে শরতের মেঘের মত ভেসে ভেসে কয়েক মিনিটের ইলসে গুঁড়ি বৃষ্টি ছড়িয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। শ্রাবণের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জেলায় প্রায় ৮৫ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে এখনও। ফলে খারিফ মরসুমে আমন চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। বৃষ্টির অভাবে ডিভিসিও এতদিন জল ছাড়েনি। তবে শেষমেশ এই পরিস্থিতিতে আমন চাষে গতি আনতে শনিবার ভোর থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজের রাইট ও লেফ্ট ব্যাঙ্ক দিয়ে জল ছাড়া শুরু করল ডিভিসি। সেচ দফতর সূত্রে জানাগেছে, ডিভিসির লেফট ব্যঙ্ক মেইন ক্যানেল ও রাইট ব্যঙ্ক মেইন ক্যানেল থেকে মোট ৬ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে।
পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় শষ্যগোলা পূর্ব বর্ধমান সহ, বাঁকুড়া, হাওড়া ও হুগলি জেলায় আমন চাষ অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বাঁকুড়া জেলাতো বটেই, বৃষ্টির অভাবে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়া জেলারও বিস্তীর্ণ কৃষি জমি এখনো অনাবাদী রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ডিভিসির মাইথন ও পাঞ্চেৎ জলাধার থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মত ওই দুই জলাধার থেকে জল পেয়েই দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুর্গাপুর ব্যারেজের ২ পাশে থাকা সেচ খাল দিয়ে জল ছাড়া শুরু হয়।
জানা গেছে, প্রাথমিক ভাবে ৬০০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে রাইট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানেল ও লেফট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানেলে। আপাতত ১২ থেকে ১৫ দিন ধরে এই পরিমাণ জল ছাড়া হবে বলে জানিয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। তবে দামোদরের আপার ভ্যালিতে বৃষ্টি হলে সমস্যা নেই। আর তা না হলে মাইথন বা পাঞ্চেৎ জলাধারে যে পরিমাণ জল রয়েছে তা থেকে আর জল ছাড়া সম্ভব হবে না। আপাতত ১ লক্ষ ৩০ হাজার একর ফুট জল দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ডিভিসি।
এই জল ছাড়ার পর বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, এবছর বৃষ্টির পরিমাণ অত্যন্ত কম। মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসির কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দেওয়ার আবেদন করতেই তারা জল ছেড়েছে। এর ফলে বাঁকুড়ার বড়জোড়া, সোনামুখী ও পাত্রসায়ের ব্লকের একাংশের চাষিরা উপকৃত হবেন। পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়া জেলায় আমন চাষ গতি পাবে বলে তিনি মনে করেন। ডিভিসির জল পেয়ে আশাবাদী সব পক্ষই।