আমাদের ভারত, ২৭ জুলাই: শনিবার দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে বঞ্চনার প্রতিবাদে ওয়াক আউট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
অধীরবাবুর দাবি, জাতীয় রাজনীতিতে রাহুল গান্ধীর উন্নতিতে মমতার ঈর্ষা হচ্ছে এবং তার জন্যই ইন্ডি জোটে থেকেও যা ইচ্ছে তাই করছেন।
মমতার ওয়াকআউট নিয়ে তরজার মধ্যেই এদিন মুখ খোলেন অধীরবাবু। তিনি বলেন, “গোটা চিত্রনাট্য সাজানো ছিল আগে থেকেই। কী হবে, কী করবেন, আগেই তো বলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলতে দেওয়া না হলে, বেরিয়ে আসবেন বলেও জানিয়েছিলেন। যা বলেছিলেন, তা’ই করলেন। নাটকের স্ক্রিপ্ট যা বলেছিলেন, মিলে গেল।
অধীরবাবুর অভিযোগ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন সমস্যা হল, জাতীয় ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধীর উত্থান মমতার প্রাণে, মনে এক অদ্ভুত ঈর্ষা জন্ম নিয়েছে। তাই জাতীয় নেত্রী হিসেবে নিজের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরতে নেমেছেন।”
অধীরবাবুর কথায়, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমি সব পারি। তোমরা কী করছো, দেখার দরকার নেই। বাইরে বলব জোটে আছি, আসলে মশারির মধ্যে মশারি তৈরি, না শ্যাম রাখছেন, না কূল। একটা ঢপের রাজনীতি শুরু করেছেন। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, ওঁকে যে ডেকে নিয়ে গিয়ে অপমান করা হল, তা নিয়ে মামলা করছেন না কেন? কেন অনশনে বসছেন না? তখন আমার কথায় খারাপ লেগেছিল অনেকের, কিন্তু পা ভাঙ্গার নাটক ভোটের ফলাফলের দিন শেষ হবে আগেই বলেছিলাম। বাংলার এই মডেলই এখন দিল্লিতে দেখাচ্ছেন উনি।”
‘ইন্ডি’ জোট যেখানে বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে মমতা কেন নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে গেলেন? প্রশ্ন তুলেছেন অধীর। তিনি বলেন, “শ্যাম রাখি না কূল করতে গিয়ে ঢপের কীর্তন করতে হয়েছে।” এর আগে, হেমন্ত সোরেনেরও বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে যদিও যাননি তিনি।
অধীরবাবুর দাবি, রাহুলের উত্থান ঠেকাতে মমতা সমান্তরাল একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন, যেখানে বিরোধী জোট তাঁর কথা শোনে বলে প্রমাণ করা যায়। রাহুলকে মমতা পছন্দ করেন না, ঈর্ষা থেকেই এসব করছেন বলে দাবি অধীরবাবুর।
প্রসঙ্গত, ‘ইন্ডি’ শিবিরের শরিক দলগুলি এদিনের বৈঠক বয়কট করলেও, বিরোধীদের প্রতিনিধি হিসেবে একমাত্র মমতাই বৈঠকে যান। বাংলা এবং বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রীয় অবিচারের কথা তুলে ধরতেই বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বলে জানান। কিন্তু বৈঠক শুরু হওয়ার ঘণ্টা দুয়ের মধ্যেই বেরিয়ে আসেন মমতা। বাকিদের বেশি সময় দেওয়া হলেও, পাঁচ মিনিটে তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন।