water, shortage, Bankura, গরম পড়তেই পানীয় জলের সংকট বাঁকুড়ার গ্ৰামাঞ্চলে, ভোট বয়কটের ভাবনা

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৬ এপ্রিল: গরম পড়তে না পড়তেই বাঁকুড়ার গ্ৰামাঞ্চলজুড়ে পানীয় জলের সংকট শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে এবং দাবদাহ বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি বাড়ছে পানীয় জল ও ব্যবহারিক জলের সংকট। এখন থেকেই জেলার বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জলের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। এমনও অনেক গ্রাম আছে সেখানে দীর্ঘ ২০-৩০ বছর ধরে গ্রীষ্ম পড়তেই পানীয় জলহীন হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। বাঁকুড়া ২ নম্বর ব্লকের মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের লাপুড়িয়া গ্রামের ছবি এরকমই। ৪৫০ পরিবারের বাস এখানে। পানীয় জলের জন্য গ্রামবাসীদের পায়ে হেঁটে যেতে হয় প্রায় আড়াই কিমি রাস্তা।

গ্রামের বাসিন্দা অজিত কুমার ঘোষ বলেন, ২০২০ সালে গ্রামে ২টি ট্যাপ কল বসানো হয়। সুন্দর জল পড়তো। তারপর ঘরে ঘরে বসলো পানীয় জলের কল। কিন্তু জল আর আসে না। যে ২টো সর্বজনীন কল ছিল সেগুলিও বন্ধ হয়ে গেল। অজিত ঘোষ জানান, গ্রাম থেকে ৩ কিমি দূরে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক নির্মাণ হয়েছে, কিন্তু জল তুললেই ঝরঝর করে জল বেরিয়ে যায়। ফলে ট্যাঙ্কেও জল ওঠে না। শুনছি জল ভরলে সেটি ভেঙ্গে পড়বে। সরাসরি জল সরবরাহ করার উদ্যোগ নেয় পিএইচই। কিন্তু সেক্ষেত্রেও বিপত্তি ঘটে। মাটির তলার পাইপ যেখানে সেখানে ফেটে যাচ্ছে। ফলে জল সরবরাহ বন্ধই করে দেওয়া হল।

এই সমস্যার বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনিক স্তরে লিখিত আকারে আবেদন জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। গ্রামবাসীদের দাবি, শুধুমাত্র প্রতিবার ভোটের আগে ট্যাঙ্কারে করে পানীয় জল সরবরাহ করলেও ভোট মিটে যাওয়ার পর সেই ব্যবস্থার আর দেখা মেলে না। লোকসভা ভোট আসন্ন, তাই ভোট চাইতে মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। তাদের কাছে গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ভোটের আগে সমস্যার সমাধান না হলে তারা ভোট দেবেন না।

অপরদিকে জেলার গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকের কাপিষ্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের চড়াডিহি, বিড়রা, শুয়াড়া, রামহরিপুর ইত্যাদি ১০- ১২টি গ্রামে চরম জলের সংকট দেখা দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পাইপ লাইনে অপর্যাপ্ত ও অনিয়মিত জল সরবরাহ করে কোনো রকমে বিক্ষোভ সামাল দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে এলাকার পুকুর, খাল, বিল, কুয়ো শুকিয়ে গেছে। জলস্তর হু, হু করে নামতে শুরু করায় টিউবওয়েলগুলিও জল দিতে পারছে না। লাপুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সব দলের প্রার্থীরা নিশ্চই গ্রামে একবার আসবেন। জানি ওনারা কি বলবেন। কিন্তু আমরা ওনাদের সঙ্গে কথা বলবো না। কারণ গ্রামবাসীরা লোকসভা ভোট বয়কট করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *