পানিহাটিতে ঘরোয়া আম বৈঠক ও বৈচিত্র্য মেলা

ধ্রুবজ্যোতি পাল
আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২১ মে: উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির শতদল ভবনে অনুষ্ঠিত হল আমের ঘরোয়া বৈচিত্র্য মেলা। আয়োজন করেছিল ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’। এই ঘরোয়া বৈঠকে মূলত পানিহাটি ও খড়দহ সংলগ্ন বাগানবিলাসী ও উদ্যানপ্রেমীরাই অংশগ্রহণ করেছিলেন। তারা নিজেদের গাছের উৎকৃষ্ট মানের আম এই বৈঠকের জন্য আনেন এবং পরিবেশন করেন, তার গুণাবলিও বর্ননা করেন।

কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ থেকে এই বৈঠকের জন্য বিবিধ জাতের আম পাঠিয়েছিলেন স্বামী সুমনানন্দজী মহারাজ। নব কলেবরে নির্মিত ‘মানিক রাজার আম বাগান’-এর উৎপাদিত আম পরিবেশিত হয়। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নিজের হাতে লাগানো আমগাছের পাকা আমও এখানে আনা হয়েছিল। এই বৈচিত্র্য মেলার আহ্বায়ক ছিলেন দেশের মাটি কল্যাণ মন্দিরের অন্যতম পরিচালক মিলন খামারিয়া। মেলায় প্রায় ৩০ টি জাতের আম প্রদর্শিত হয়।

প্রদর্শিত আমগুলির সিংহভাগই ছিল জলদি জাতের আম, যা এখন গাছে পেকে উঠেছে। সকলে মিলে নানান জাতের আমের স্বাদ গ্রহণ করেন।

চিকিৎসক ডা. মানস সোম, আম খাওয়ার উপকারিতা এবং মধুমেহ রোগীদের জন্য কিছু সতর্ক বার্তাও ব্যাখ্যা করেন। যাদের সুগার আছে তাদের কখনোই আম খাওয়া উচিত নয় বলে জানান। খেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খেতে হবে।

শোভন ব্যানার্জি, জয়ন্ত নাথ, জ্যোতিপ্রকাশ ধর সহ অনেকেই বিভিন্ন জাতের আম নিজের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। নিজের গাছের আম সম্পর্কে বলতে গিয়ে তারা উদ্বেলিত হন। নীলাঞ্জনা ব্যানার্জি নিজে আমসত্ত্ব করে সারাবছর বাড়িতে খাওয়ার কথাও বলেন।

আম বৈচিত্র্য মেলা সম্পর্কে মিলন খামারিয়া জানান, “আম আমাদের অত্যন্ত প্রিয় একটি ফল। প্রায় সবাই খেতে ভীষণ পছন্দ করেন। আম থেকে আমসত্ত্ব, আম চুর, আমতেল, আমসি, আমের আচার ইত্যাদি তৈরি করে সারা বছর রেখে খাওয়া যায়। পণ্যগুলি যথাযথ ভাবে তৈরি করে, বিক্রি করে অর্থনৈতিক দিক দিয়েও স্বাবলম্বী হওয়া যায়।”

আম কেন্দ্রিক কৃষি সংস্কৃতি বিষয়েও আলোচনা হয়। উদ্যানবিজ্ঞানী এবং লোকসংস্কৃতি বিদরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ও তাদের মূল্যবান বক্তব্য পরিবেশন করেন। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতি বছরই আম বৈচিত্র্য মেলা নানান জায়গায় ঘরোয়াভাবে আয়োজন করবে দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির। আমচাষের প্রচার ও প্রসারই আয়োজকদের মূল উদ্দেশ্য। আম সংরক্ষণ করে কীভাবে পারিবারিক পুষ্টির যোগান সারাবছর ধরেই করা যায়, তা এই কার্যক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *