পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ অক্টোবর: আজকের প্রবল বৃষ্টিতে কোলাঘাট ব্লকের জলবন্দি এলাকার পরিস্থিতি আরও অবনতি হলো। ব্লকের ভোগপুর, দেড়িয়াচক, সাগরবাড়, বৃন্দাবনচক, খন্যাডিহি প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার জলস্তর অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ওই এলাকাগুলির একটা অংশের জল সোয়াদিঘি খাল দিয়ে রূপনারায়ণে বের হয়। আরেকটা অংশের জল দেহাটি খাল দিয়ে কোলাঘাটের রূপনারায়ণে বের হয়।
টোপা, টোপা- ড্রেনেজ, চাপদা-গাজই, দেহাটি খালের মাধ্যমে পাঁশকুড়া ব্লকের কেশাপা, মাইশোরা, পাঁশকুড়া-১ ও কোলাঘাট ব্লকের বৃন্দাবনচক, সিদ্ধা-১ ও ২, খন্যাডিহি, পুলসিটা, সাগরবাড় প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫০টি মৌজার বর্ষার জল বের হয়ে থাকে। কিন্তু ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ দেহাটি খাল ও ওই খালের সাথে যুক্ত শাখা খালগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবং খালের ভেতরে থাকা কচুরিপানা সহ বিভিন্ন প্রকার আবর্জনা, জঞ্জাল জমে থাকায় উপরোক্ত এলাকা প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। গ্রামের রাস্তাগুলি বেশিরভাগই জলের তলায়। আমন ধান, ফুলনও সবজি চাষ একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বহুদিন জল জমে থাকায় ওই জমা জল থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। এলাকায় সাপের উপদ্রব বাড়ছে। অবিলম্বে ওই এলাকার জমা জল বের করতে দেহাটি খালের নিম্নাংশ অর্থাৎ বরদাবাড় থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত অংশের খাল পরিষ্কারের দাবিতে গত ৩রা অক্টোবর কোলাঘাটের বিডিও’র কাছে ডেপুটেশন দেয় কৃষক সংগ্রাম পরিষদ।
আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন সেচ দপ্তরের এসডিও সহ দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরা। এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে সেচ দপ্তরের এসডিও নাজেশ আফরোজ ওই এলাকা পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, সহকারি সম্পাদক তপন মাইতি ও গোবিন্দ পড়িয়া প্রমুখ।
অন্যদিকে সকাল থেকে দেহাটি খালের বরদাবাড় থেকে কোলাঘাট অংশের জঞ্জাল পরিষ্কারে হাত দিয়েছে ঠিকাদার।
নারায়ণবাবু অভিযোগ করেন, এই বিস্তীর্ণ এলাকার জল নিকাশী সমস্যা সমাধানে সেচ দপ্তর দেনান-দেহাটি জলনিকাশি প্রকল্প রূপায়ণ না করায় হাজার হাজার মানুষকে এই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। উনি বলেন, মাত্র পাঁচ/সাত কিলোমিটার দূরে রূপনারায়ণ থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলগুলির ঔদাসীন্যতায় প্রতি বছর এই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।