TMC, state, লোকসভা ভোটে সবুজ ঝড় উঠলেও, রাজ্যের ৮ মন্ত্রীর বিধানসভায় হেরেছে তৃণমূল

আমাদের ভারত, ৮ জুন: লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হতেই সব রাজনৈতিক দলেই কাটাছেঁড়া বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে নিঃসন্দেহে তৃণমূল বড় জয় পেয়েছে। কিন্তু তার মধ্যে বড় একটা অশনি সংকেত রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের জন্য। এই লোকসভা নির্বাচনে জোড়া ফুলের বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন রাজ্যের ৮ মন্ত্রী। তারা সকলেই ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন। শুধু তাই নয়, তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। উত্তর দিনাজপুর থেকে কলকাতা, রাজ্যের মোট আটটি মন্ত্রীই তাদের বিধানসভায় এলাকায় হেরেছে।

যে আটজন মন্ত্রীর বিধানসভায় তৃণমূল হেরেছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা ও দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজার বিধানসভা কেন্দ্র শ্যামপুকুরে হেরেছে তৃণমূল এবং বিজেপি জিতেছে সেখানে। শ্যামপুকুর বিধানসভা মূলত উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, এই কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপির হয়ে লড়াই করেছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসার তাপস রায়। এই আসন তৃণমূল পেলেও শ্যামপুকুর বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির তাপস রায়।

পাশাপাশি কলকাতা লাগোয়া বিধান নগর বিধানসভাতেও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এখানকার বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু। বিধাননগর বিধানসভা আবার বারাসত লোকসভার অন্তর্গত। এই বারাসত লোকসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ঘাসফুলের প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি টানা চারবার পরপর জিতলেন। কিন্তু দমকল দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সুজিত বসু বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল ১১ হাজার ভোটে হেরেছে বিজেপির কাছে।

ওদিকে উত্তরবঙ্গে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের বিধানসভা কেন্দ্র হেমতাবাদে ৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। হেমতাবাদ বিধানসভা রায়গঞ্জ লোকসভার অন্তর্গত। রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে এবার জিতেছে বিজেপি। মালদার দুই মন্ত্রী তাজমুল হোসেন এবং সাবিনা ইয়াসমিন- এর বিধানসভা কেন্দ্রে হেরেছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের বিধানসভা কেন্দ্র মোথাবাড়িতে বড় ব্যবধানে হেরেছে তৃণমূল। তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রটি দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের হরিশচন্দ্রপুর বিধানসভা আবার মালদা উত্তর লোকসভার অন্তর্গত। এই লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছে বিজেপি। তৃণমূলকে হারিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু। মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের কেন্দ্র হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভাতে তৃণমূল পিছিয়ে ৫ হাজার ভোটে। সাবিনা ইয়াসমিনের মোথাবাড়িতে কংগ্রেসের চেয়ে তৃণমূল পিছিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার ভোটে। প্রসঙ্গত, মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রটি পড়ে মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। সারা রাজ্যের মধ্যে এই একটি মাত্র লোকসভা আসনটিতে জয় পেয়েছে কংগ্রেস।

সেই সঙ্গে কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে জিতেছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। কিন্তু কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় তৃণমূল পিছিয়ে ৯০০০ ভোটে। এছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই মন্ত্রী অখিল গিরি এবং বিপ্লব রায়চৌধুরীর বিধানসভাতেও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি রামনগর বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৯০০০ ভোটে। আবার মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল তিন হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে। রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি পড়ে কাঁথি লোকসভার মধ্যে এবং পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা পড়ে তমলুক লোকসভার অধীনে, এই দুটি কেন্দ্রে পদ্ম ফুটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *