সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১০ মার্চ: দোলের রাতে শোভাবাজারে যুবকের মৃত্যু। গ্রেফতার করা হল দুই অভিযুক্ত অভিষেক গুপ্ত এবং জীবন দেবনাথকে। পুলিশের দাবি, সোমবার শোভাবাজারে মত্ত অবস্থায় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বচসা, ধাক্কাধাক্কির পর পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় যুবকের।
বছর পঁয়ত্রিশের মৃত যুবকের নাম প্রমোদ সাউ। অভিযোগ, সোমবার রাতে নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়ায় দুই যুবক অভিষেক গুপ্ত ও জীবন দেবনাথ। প্রমোদ সেখানে উপস্থিত হওয়ায়, বিবাদ চরমে ওঠে। ধাক্কাধাক্কিতে ফুটপাথের ওপর পড়ে যান প্রমোদ। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ফুটপাথের টাইলসে গলা কেটেই মৃত্যু, দাবি পুলিশের।ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বড়তলা থানার পুলিশ।
প্রমোদ ৩০ বছর আগে বিহারের বেগুসরাই থেকে কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। বিয়ে করেন ১০ বছর আগে। বেগুসরাইতে তার স্ত্রী এবং আট বছরের মেয়ে রয়েছে।
এলাকার মানুষের দাবি, গত প্রায় ৩ বছর ধরে বড়তলা থানা এলাকার অরবিন্দ সরণির ত্রাস হয়ে উঠেছিল ধৃত দুই ভাই। ৩০ নম্বর অরবিন্দ সরণির একচিলতে দোকান ঘরে চলত রাজত্ব। ঝালাই ও চাকা রিপেয়ারের কাজের আড়ালে অন্য কোনো কাজ চলত বলেও অভিযোগ। প্রায় প্রতিদিন সকাল থেকেই চলত দেদার মদ্যপান। এলাকা দিয়ে যাতায়াতেও কার্যত অস্বস্তি বোধ করতেন বাসিন্দারা। দোলের দিন সকাল থেকে তা চরম আকার ধারণ করে। বিকেলের পর মাতলামির দায়ে এলাকায় টেকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল।
খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলের। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের শাসক-ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করলেও, অস্বীকার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের। ‘ওরা দুষ্কৃতী, অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত, দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই’, দাবি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুনন্দা সরকারের। তাঁর বক্তব্য, এলাকায় এর আগেও একাধিকবার এই দুই ভাইয়ের বিরূদ্ধে বিভিন্ন অসামাজিক কাজকর্ম, তোলাবাজি, বেআইনি পার্কিং করিয়ে টাকা তলার রাশি রাশি অভিযোগ আছে। প্রতি ক্ষেত্রেই তার নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এসবের কিছুই জানেন না। বরং তিনি পুলিশকে বললেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না, এমনটাই দাবি কাউন্সিলরের।