Sandip Ghosh, Bangaon, মেধাবী তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হোক সন্দীপ ঘোষের, দাবি বনগাঁর আমজনতার

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা,
১৯ আগস্ট: ঘরে ঘরে মানুষ জন্মায়, মনুষ্যত্ব জন্মায় না’ কবিগুরুর অমোঘ বাণী। আজ যেন মিলে গেল এক নিমেষে। মিলবে নাই বা কেন। আজও স্কুলের মেধা তালিকায় নামটা জ্বলজ্বল করছে সন্দীপ ঘোষ ৭৯.৭ শতাংশ। সালটা ছিল ১৯৮১। সে বছরই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রায় ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সন্দীপ। শুধু স্কুলের নয়, মুখ উজ্জ্বল করেছিল গোটা বনগাঁ মহকুমার। আজ তারই বিরুদ্ধে উঠছে অভিযোগের আঙুল।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র থেকে শুরু করে বনগাঁর মানুষের দাবি একটাই, স্কুলের মেধা তালিকার বোর্ড থেকে সন্দীপের নামটা মুছে দেওয়া হোক। সন্দীপ নির্দোষ প্রমাণ হলে তবেই তালিকায় নাম রাখা যেতে পারে। তাদের আরও দাবি, এই বনগাঁ হাই স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন অমর কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে শুধু বনগাঁ হাই স্কুল নয়, গর্বিত গোটা বনগাঁ মহকুমার মানুষ। সেই হাই স্কুলেরই মেধাবী ছাত্র সন্দীপের এহেন কাণ্ডে মাথা হেঁট হয়েছে গোটা স্কুলের। বনগাঁ শহরের আমলা পাড়ার বাসিন্দা সন্দীপ ওরফে নোটন। ছোট বেলা থেকেই প্রখর মেধাবী বলে জানালেন এলাকার বাসিন্দা।

বনগাঁ হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। তারপর নবম-দশম অন্য স্কুলে পড়েন তিনি। একাদশে আবারও বনগাঁ হাই স্কুল। ১৯৮৯ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন পাড়ার ‘নোটন’ ওরফে ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। নম্বর ছিল চোখধাঁধানো– ৮০ শতাংশ! সেই সময় এই নম্বর খুবই কৃতিত্বের ব্যাপার। তাতেই গর্বিত হয়ে ওঠে গোটা স্কুল, পাড়া-প্রতিবেশী, সহপাঠীরা। তার পর জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ভালো ফল করে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। শান্তশিষ্ট, মেধাবী, পরিশ্রমী, নরম স্বভাবের ছাত্রকে বেশ ভালোই বাসতেন শিক্ষকরা। সহপাঠীরাও জানত, সন্দীপ ভালো ছেলে। কিন্তু সেসব জানা-চেনা নিমেষেই কি বদলে যাচ্ছে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার পর?

কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বনগাঁয় সন্দীপের তখনকার এক প্রতিবেশী বলছেন, ”নরম প্রকৃতির ছেলে ছিল আমাদের নোটন। বিশেষ বন্ধু ছিল না। তবে মেয়েদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। খুব মজা করত। সেদিনের নোটনকে নিয়ে আজ যা শুনছি, তাতে তো আমরা বিস্মিত। চাই, এই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে আসুক। তাহলেই আমরা নিশ্চিন্ত হতে পারব।”

আরেক প্রতিবেশী পার্থসারথী দে-র বক্তব্য, ”বনগাঁ হাই স্কুলে ওর ব্যাচের বা তার আগে-পরে আরও অনেকেই চিকিৎসক হয়েছেন। তাঁরা আমাদের, বনগাঁবাসীর জন্য অনেক সময়েই চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করার চেষ্টা করেছে। তাঁদের সেলাম জানাই। কিন্তু আজ, সন্দীপ ঘোষকে আমরা সেলাম জানাতে পারছি না। তাঁর বিরুদ্ধ যে অভিযোগ উঠছে, তা সত্যি না হোক, সেটাই চাই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *