সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৮ এপ্রিল: পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সম্পন্ন হলো মৃত জওয়ান অরূপ সাইনির অন্তেষ্টিক্রিয়া। মণিপুরে কর্মরত অবস্থায় কুকি জঙ্গি হামলায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান অরূপ সাইনির মৃতদেহ আজ বাঁকুড়ার পাঁচাল গ্রামের গোয়ালাপাড়ায় নিজ বাসভবনে নিয়ে আসা হয়।প্রথা অনুসারে সম্পূর্ণ পুলিশি সম্মানে ও গান স্যালুটের মাধ্যমে তাঁর মৃত দেহের সৎকার করা হয়। এই সময় ডেপুটি জেনারাল অব পুলিশ সহ সিআরপিএফ- এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা শেষ শ্রদ্ধা জানান।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম হাসান সহ জেলা পুলিশের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। দেশের সুরক্ষা ও শান্তি শৃঙ্খলা অটুট রাখতে তাঁর এই আত্মবলিদান ও বীরত্বের কথা তুলে ধরেন পুলিশ ও সিআরপিএফ আধিকারিকরা। মৃত জওয়ানকে একবার চোখের দেখা দেখতে ও তার সৎকার দেখতে ব্যাপক জনসমাগম হয়। আজ মৃতদেহ গ্রামে আসতেই কান্নার রব পড়ে যায়।
এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে মণিপুরে কর্তব্যরত সিআরপিএফ জওয়ান, বাঁকুড়ার পাঁচাল গ্রামের গোয়ালাপাড়ার ছেলে অরূপ সাইনির মৃত্যু হয় শুক্রবার রাতে। সে খবর শনিবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরিবারকে জানানো হলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সকলেই তাকে একবার শেষ দেখা দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
রবিবার সারাদিন পাঁচাল, লায়েকবাঁধ, রাধানগর ও জয়রামপুর ইত্যাদি জায়গায় অরূপ সায়ানীর মৃত দেহ গ্রামে আনার বিষয়ে আলোচনা হতে ও তার মৃত্যুতে সহানুভূতি প্রকাশ করতে দেখা যায়। পরিবার পরিজন ছিল শোকস্তব্ধ। রবিবার মৃতদেহ গ্রামে আসার পরে তারা আর নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়েন। এদিন পড়শিদের দেখা যায় মৃত অরূপের বাবা রমাকান্তবাবু, স্ত্রী পূর্ণিমা সাইনি ও দুই ভাই স্বরূপ ও ধনঞ্জয়কে সান্তনা দিতে। পাঁচ ও সাড়ে তিন বছরের দুই মেয়েকে মায়ের পাশে চুপচাপ থাকতে দেখা যায়।
এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ২টো ১৫ মিনিট নাগাদ মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার পাহাড়ি এলাকা নারানসেনায় সিআরপিএফ ফাঁড়িতে কুকি জঙ্গিরা হামলা চালায়। চলে গুলি ও গ্রেনেডের লড়াই। অরূপ ও অন্য জওয়ানদের প্রতিরোধ ও বীরত্বে পিছু হঠে কুকি জঙ্গিরা। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সময় জঙ্গিরা গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। এই বোমার আঘাতে অরূপ সাইনি সহ দুই জওয়ানের মৃত্যু হয় ও দু’জন গুরুতর আহত হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে মণিপুরের একটি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটের কাজ শেষে সেনা জওয়ানরা বিশ্রাম করছিলেন। অরূপ ফাঁড়ির অস্ত্রাগারের দায়িত্বে ছিলেন। সেই সময় এই ঘটনা ঘটে।