আমাদের ভারত, ২৮ ডিসেম্বর: এমএলএ হোস্টেল কাণ্ড অবশ্যই ষড়যন্ত্র বলে দাবি করলেন সুকান্ত মজুমদার। এই ঘটনায় কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে’কে তলব করেছে পুলিশ। তিন দিনের মধ্যেই তাকে আসতে বলা হয়েছে শেক্সপিয়ার সরণী থানায়। আর তাতেই এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, আমি আজ সকালবেলায় বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি
এফআইআর করবেন যে, আমি এই ধরনের কোনো রুম বুক করিনি। ষড়যন্ত্র তো অবশ্যই। তিনি বলেন, “বিধায়ক আমাকে যেটা জানালেন, সুপারের সঙ্গে তিনি যখন কথা বলেছেন সুপার ওই ব্যক্তির ছবি দেখে বলেছেন ওই ব্যক্তিকে তো চেনা চেনা লাগছে। তার মানে যে ব্যক্তি ধরা পড়েছে সে ব্যক্তি বহু বার বা বহুদিন এমএলএ হোস্টেলে থেকেছেন। তিনি শুধুমাত্র আমাদের বিধায়কের সই জ্বাল করে থেকেছেন শুধু এটাই নয়, হয়তো তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো বিধায়কের সই নিয়ে এর আগেও থেকেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার কালনা পৌরসভার চেয়ারম্যানের কাছে একটি ফোন যায়। বলা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে ফোন করা হচ্ছে। কেন ফোন করা হয়েছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানের দাবি, ফোনে বলা হয় তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। যদি ৫ লক্ষ টাকা দেন তাহলে এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। এমনকি পুরসভার চেয়ারম্যানকে ডেকে পাঠানো হয় কলকাতার কিড স্ট্রিট এমএলএ হস্টেলে। সন্দেহ হওয়ায় তিনি শেক্সপিয়ার সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ ও ফোনের সূত্র ধরে এমএলএ হোস্টেল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে দাবি, এমএলএ হোস্টেলে যে ঘরে অভিযুক্ত ছিলেন সেই রুম ইমরানের নামে বুক হয়েছে। বুক করেছিলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে।
এরপর ই- মেইলে বিধায়ককে নোটিশ পাঠানো হয়। বিধায়ক যদিও জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে সহযোগিতা করবেন। তিনি বলেন, এটা খুবই সংবেদনশীল ব্যাপার। এমএলএ হোস্টেলের ভিতরে এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল। সেখানে আমার নাম করে চিঠি দিয়ে তারা রুম বুক করল। আমার যেমন দরকার বাকি বিধায়কদেরও নিরাপত্তার দরকার। এখন যাদের নাম বলা হচ্ছে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নাম আমি জীবনে শুনিনি। চেনা তো দূরের কথা। যাদের নামই শুনিনি চিনি না তাদের নামে আমি রুম বুক করব প্রশ্নই ওঠে না।
এমএলএ হোস্টেলে বিধায়কের সুপারিশ ছাড়া সাধারণ মানুষের পক্ষে ঘর বুক করা সম্ভব নয়। বিজেপি বিধায়ক জানান, এমএলএ হস্টেলে থাকার যে নিয়ম, আমার কোনো পরিচিত ব্যক্তি যদি কোনো কারণে হোস্টেলে যায় সে ক্ষেত্রে আমাদের প্যাডে চিঠি দি। হোস্টেল সুপারকে তার নাম, বায়োডাটা, ফোন নম্বর জানিয়ে চিঠি করি। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৬০ টাকায় রুম খালি থাকলে বুকিং পাওয়া যায়। তাঁর দাবি, এখানে আমি চিঠি দিইনি, কী করে আমার নামে রুম বুক হয়ে গেল? তার মানে এর মধ্যে এমএলএ হোস্টেলের কেউ না কেউ যুক্ত আছে। আমার প্যাড আমার সই জাল কি না তা না দেখলে বলতে পারবো না। গতকাল হোস্টেল সুপারকে ফোন করেছিলাম যে চিঠির ভিত্তিতে রুম বুক করেছিলেন সেই চিঠিটা আমাকে পাঠান, এখনো পর্যন্ত পায়নি।