সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৪ জুন: ফের বিতর্কের মুখে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। পর্ষদকে এড়িয়ে স্কুল খোলা নিয়ে এককভাবে নির্দেশ জারি করে ক্ষোভের মুখে পড়ে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ।
গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হওয়ার পর পর্ষদের নির্দেশ মেনে গত ২ জুন বাঁকুড়া জেলাতেও প্রাথমিক স্কুলগুলি খোলে। কিন্তু বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ ২ জুন এক নির্দেশিকা দিয়ে জানায় যে অত্যাধিক গরমের কথা ভেবে ৪ জুন থেকে স্কুল হবে সকালে। সেই অনুযায়ী বাঁকুড়া জেলাজুড়ে সকালে স্কুল চালু হয়। এই নির্দেশিকা নিয়েই পর্ষদের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের। জেলা সংসদের এই নির্দেশিকায় অসন্তুষ্ট রাজ্য পর্ষদ সংসদকে তা প্রত্যাহার করতে বলে। বুধবার পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেয় যে, তাদের অনুমতি নিয়ে এই সূচি বদল হয়নি। ফের সকালের বদলে অবিলম্বে দুপুরে স্কুল করার নির্দেশও দেয় পর্ষদ। এতেই বিক্ষোভে পড়ে সংসদ। অভিভাবক, শিক্ষক- শিক্ষিকারা এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের বক্তব্য, এভাবে বার বার স্কুলের সময়সূচি বদলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলি।
প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, এভাবে বারবার সময়সূচি বদলের ফলে অভিভাবক, পড়ুয়া ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। পড়ুয়াদের পঠন পাঠনও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, বাঁকুড়া সহ বিভিন্ন জেলাগুলির বর্তমান প্রতিকূল আবহাওয়ার কথা ভেবে সকালে স্কুল করার সিদ্ধান্তই উপযুক্ত।
এবিপিটিএ’র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক বিমান পাত্র বলেন, গরমের ছুটির আগেও এরকম বিতর্ক হয়েছে। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যে ধরনের নির্দেশ জেলা সংসদকে দিচ্ছে তাতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এখন সেটা হচ্ছে না। বিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে দেখছি সবাই বিভ্রান্ত। তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সংগঠনের জেলা নেত্রী স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই সকালে স্কুলের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, গ্রীষ্মের ছুটির আগে পর্ষদের অনুমতি না নিয়ে একতরফা ভাবে স্কুলের সময়সূচী পরিবর্তন করে জেলা সংসদ। এতে পর্ষদের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। এতে ফের নির্দেশ দিয়ে পুরোনো সূচী কার্যকর করেছিল বিদ্যালয় সংসদ। গ্রীষ্মের ছুটি শেষে ফের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় সকলে অস্বস্তিতে সব মহল।