Modi, Mamata, ছিঃ! ভোট ব্যাঙ্ককে খুশি করতে সাধু সন্যাসী, রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ইসকনকে হুমকি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী: মোদী

আমাদের ভারত, ১৯ মে: রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ইসকনের বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনীতির অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুরুলিয়ার বিষ্ণুপুরের সভা থেকে মোদী দাবি করেছেন, ভোট ব্যাঙ্ককে খুশি করতে ও মুসলিম কট্টরপন্থীদের চাপে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন ও ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীদের হুমকি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আজ পুরুলিয়ার সভায় রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সাধু-সন্তদের অপমান করার অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুরুলিয়ার পর বিষ্ণুপুরের সভা থেকে এই নিয়ে বাংলার শাসক দলকে তোপ দাগেন তিনি। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, মুসলিম কট্টরপন্থীদের চাপে এবং ভোট পেতে সাধুদের অপমান করা হচ্ছে। ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের মতো সংগঠনগুলিকে বদনাম করা হচ্ছে। রবিবার পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর ও মেদিনীপুরে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী।

পুরুলিয়ার সভা থেকে মোদী বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলছি স্বামী বিবেকানন্দ যখন বিদেশে গিয়েছিলেন ভারতের কথা বলতে, তখন অনেক মানুষ তার ভক্ত হন। যারা ভারতকে ঘৃণা করতেন তারা অপমান করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দকে, কিন্তু তিনি মা ভারতীর অভিযান নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তিনি ভয় পাননি। তিনি জয় করেছিলেন। কিন্তু বাংলায় আজ আবার সেই অপমান হচ্ছে। নির্বাচনে বাংলার মানুষকে ভয় দেখাতে সব সীমা পার করেছে তৃণমূল সরকার।

মোদী বলেন, দেশ দুনিয়ায়, ইসকনকে সকলে চেনেন। রামকৃষ্ণ মিশন তৈরি করেছিলেন বিবেকানন্দ। সেবার জন্য ভারত সেবাশ্রম সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে আছে। এই সংগঠনগুলি ভারতের নাম উজ্জ্বল করে। কিন্তু আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সেই ইসকন, ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশনকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন। প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে রয়েছে এদের ভক্তরা। তারা সেবার কাজ করেন। বাংলার সরকার তাদের দিকে আঙুল তুলছে। নাম নিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এত সাহস! নিজের ভোট ব্যাঙ্ককে খুশি করতে, তোষণ করতে তৃণমূল এত নিচে নেমেছে। বাংলার লাখ লাখ মানুষের ভক্তিভাব আবেগ নিয়ে এরা ভাবে না। মোদী দাবি করেন, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রভুপাদ প্রণবানন্দ মহারাজের অপমান দেশ সহ্য করবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে সরকার বাংলার মানুষের সংস্কৃতিকে সম্মান করে না তাদের ভোটের শক্তি দিয়ে সাজা দিন। যাতে ওরা আর সাধু-সন্তদের অপমান করতে না পারে।”

এরপর বিষ্ণুপুরের সভা থেকেও তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর কথায়, তৃণমূল সাধু-সন্তদের গালিগালাজ করছেন। ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘ বিভিন্ন বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, বাংলাকে গৌরবান্বিত করেছে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সাধুদের এই সংগঠনগুলি দেশকে নষ্ট করেছে। আমারও অভিযোগ করছি, এখনকার মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম কট্টর পন্থীদের চাপে ভোট পেতে আমাদের সাধুদের এবং মহান সংগঠন গুলিকে গালিগালাজ করছেন। বদনাম করছে। হিন্দুদের ভাগীরথীতে ডুবিয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। মোদীর দাবি, “অনেক ভেবেচিন্তে এই কথা বলানো হয়েছিল। ভোট ব্যাংকের জন্য সাধুদের অপমান করা হচ্ছে মোদীর বিরুদ্ধে ভোট জিহাদের প্ররোচনা দিচ্ছে তৃণমূল।”

প্রসঙ্গত, শনিবার আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যে কি সবাই সমান? বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে শ্রদ্ধা করতাম, আমার শ্রদ্ধার তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। কিন্তু যে লোকটা বলছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না। তাকে আমি সাধু বলতে পারি না। কারণ তিনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণ মিশন আছে আমি রামকৃষ্ণ মিশনকে সাহায্য করেছি। সিপিএম খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। ইসকনকে ৭০০ একর জমি দিয়েছি। ইসকনের একটি মিশন ও মন্দির আছে। কিন্তু দিল্লি থেকে নির্দেশ এসেছে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলে। রামকৃষ্ণ মিশন একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। অন্যকে কেন ভোট দিতে বলবে ওরা? কেউ কেউ সীমা অতিক্রম করছেন সবাই নয়।” মমতার দাবি, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকতো না, যদি আপনাদের এই মেয়েটা না থাকতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *