আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৫ মার্চ: চিকিৎসকের গাফিলতিতে মাতৃগর্ভেই শিশু মৃত্যুর অভিযোগ বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ঘটনা। অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন প্রসূতির পরিবার। ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারক সুকুমার দে।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে বালুরঘাটের ময়ামারির বাসিন্দা শিল্পী সরকার তাঁর মেয়ে শিউলি সরকারকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান। দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা হাসপাতালের বেডে যন্ত্রনায় কাতরানোর পর গঙ্গারামপুরের নয়াবাজারের বাসিন্দা ওই প্রসূতিকে রাত্রি সাড়ে আটটা নাগাদ লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, সেই সময় দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মৃন্ময়ী দত্তকে একাধিক বার বলেও মেয়ের সিজার করাতে পারেননি শিল্পী সরকার। উল্টে খারাপ ব্যবহার করে রিপোর্টের কাগজপত্র ছুঁড়ে মারেন ওই চিকিৎসক বলে অভিযোগ। যার পর রাত ৯টা নাগাদ একটি ইনজেকশন দিলে মেয়ের পেট শক্ত হয়ে যায় বলেও অভিযোগ শিল্পী সরকারের। ঘটনায় মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসককে পুনরায় সিজার করার অনুরোধ করেন শিল্পী সরকার। কিন্তু চিকিৎসক নর্মাল ডেলিভারি জন্য অপেক্ষা করেন বলে অভিযোগ।
সূত্রের খবর, রাত ৩টে নাগাদ মাতৃগর্ভে শিশুর হার্ট বন্ধ হয়ে যায়। যার পরেই একাধিক বার ওই চিকিৎসক একটি সাদা কাগজে তার পরিবারের লোকেদের সই করতে বলেন। যদিও তারা তা করতে অস্বীকার করেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই প্রসূতির মৃত সন্তান প্রসব হতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে তার বাড়ির লোকেরা। এই ঘটনায় গর্ভের শিশুকে মেরে ফেলার অভিযোগ তুলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন তার পরিবারের লোকেরা। ঘটনা জানিয়ে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রসুতির মা শিল্পী সরকার।
প্রসূতির আত্মীয় ডলি সরকার ও জ্যোতিষ সরকাররা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির পর মহিলা চিকিৎসকের চরম অবহেলার কারণেই মৃত্যু হয়েছে গর্ভের সন্তানের। ঘটনার তদন্তের দাবী জানিয়েছেন তাঁরা।
প্রসূতির দাদা বসন্ত সরকার বলেন, গঙ্গারামপুর থেকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভালো চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার আশাতেই বালুরঘাট হাসপাতাল বেঁছে নিয়েছিলেন। কিন্তু চিকিৎসকের অবহেলাতে মৃত্যু হয়েছে শিশুর।
প্রসূতির মা শিল্পী সরকার বলেন, একাধিক বার বলা সত্বেও তাঁর মেয়ের সিজার করানো হয়নি। আর যাতে কোন মায়ের কোল খালি না হয় সেই ব্যবস্থা করুক কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।