সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২২ মার্চ: নির্বাচনী প্রচারেও একে অপরকে টেক্কা দিতে মরিয়া প্রাক্তন স্বামী স্ত্রী। বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনের নির্বাচনে আলাদা মাত্রা পেয়েছে এই ডিভোর্সী দম্পতির লড়াই।একদিকে প্রাক্তন স্বামী সৌমিত্র খাঁ দ্বিতীয় বারের জন্য লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। অপরদিকে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মন্ডল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী।
গত লোকসভা নির্বাচনে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সৌমিত্র খাঁর যখন জেলায় প্রবেশ নিষেধ, তখন স্ত্রী সুজাতা মন্ডলই প্রচারের দায়িত্ব ভার কাঁধে তুলে নেন।সুজাতা দেবীর প্রচারে ভালো ফল মেলে। সৌমিত্র খাঁ সংসদে পা রাখেন। এখন সেই সুজাতাদেবী সৌমিত্রবাবুর প্রধান প্রতিপক্ষ। এখন সৌমিত্রবাবু জোরদার প্রচার শুরু করেছেন। চষে বেড়াচ্ছেন সারা এলাকা।গতকাল প্রচারে বেড়িয়ে রাজনৈতিক সৌজন্যতা দেখিয়ে এলাকাবাসীদের নজর কাড়লেন তিনি।
বিষ্ণুপুর শহরে পরিবেশ বান্ধব ইভি সাইকেলে চড়ে ভোট প্রচারে বেরিয়েছিলেন সৌমিত্রবাবু। সাইকেলে চড়ে ভোট প্রচারের সময় আচমকা দেখা হয়ে যায় বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতি সুনীল দাসের সাথে। সৌমিত্রবাবু তাঁর সঙ্গে কুশল বিনিময় করে পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। এই সৌজন্য প্রণামের খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। সৌমিত্রবাবু অবশ্য এই প্রণামকে রাজনৈতিক সৌজন্যতা বলেই দাবি করেছেন।
অপরদিকে নির্বাচনী প্রচারে সমানে টক্কর দিয়ে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌমিত্রবাবুর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মন্ডল।সুজাতাদেবীকে বাড়ি বাড়ি, সবজি বাজারে গিয়ে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারে বেড়িয়ে কোতুলপুর নেতাজি মোড় সংলগ্ন এলাকায় একটি চায়ের দোকানে ঢুকে দোকানদারকে পাশে রেখে সুজাতা দেবীকে চা বানিয়ে দলীয় বিধায়ক হরকালী প্রতিহার, ব্লক সভাপতি তরুণ কুমার নন্দীগ্রামি সহ সমস্ত কর্মী সমর্থকদের খাওয়াতে দেখা যায়। চা বানাতে বানাতে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম না করে কটাক্ষ করতেও দেখা যায় সুজাতাদেবীকে। তিনি কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘দেখুন কেউ তো চা বানাতে বানাতে দেশটাও বেঁচে ফেলেছেন। কিন্তু আমরা মানুষের মন জয় করছি।’ দোকানে ঢুকে শুধু চা বানানো নয়, সুজাতা দেবীকে সেলুনে ঢুকে চুল কাটতেও দেখা যায়। মন্দিরে মন্দিরে পুজো দেওয়া, শিশুদের কোলে তুলে নেওয়া, মহিলাদের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নাচ ইত্যাদি সব কিছুই করছেন তিনি। কোথাও আবার ভোটারদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে আইন মিডিয়াকে তোয়াক্কা করেন না বলতেও শোনা যাচ্ছে। দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জিকে অবলীলাক্রমে মা সারদার সঙ্গে তুলনা করেন তিনি, যা নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি।