বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র শিলিগুড়ি, পুলিশের লাঠিতে ১ বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ

আমাদের ভারত, ৭ ডিসেম্বর: উত্তরকন্যা অভিযানে যাওয়া তাদের দলের এক কর্মীর পুলিশের লাঠির আঘাতে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। পুলিশের লাঠিতে গুরুতর আহত অবস্থায় বছর পঞ্চাশের উলেন রায় নামে ওই বিজেপি কর্মীকে নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান বলে দাবি করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি গজলডোবা এলাকার মিলন পল্লীর বাসিন্দা ছিলেন। এদিনের ঘটনায় সৌমিত্র খান, বিজেপির যুবনেতা তেজস্বী সূর্য সহ অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে খবর।

শিলিগুড়িতে বিজেপি যুব মোর্চার উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়। কৈলাস বিজয়বর্গীয় দিলীপ ঘোষের জোড়া মিছিল একাধিক জায়গায় বাধা পায়। পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করেছিল তা ভাঙা হয়। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তা-ধস্তি হলে ছোড়া হয় জলকামান। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান কাঁদানে গ্যাস ছোড়া ছাড়াও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। ব্যারিকেডে আগুন লাগিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানায় তারা।

বিজেপি রাজ্য সম্পাদক দীপেন প্রামাণিকের অভিযোগ, বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল উত্তরকন্যা’-র দিকে এগোনোর সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে। লাঠির আঘাতে তাদের দলের বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক মহিলা কর্মীও। এদিন বিজেপির যুব মোর্চার মিছিল আটকাতে একাধিক ব্যারিকেড তৈরি করেছিল পুলিশ। দফায় দফায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ফুলবাড়ি এলাকায় জলকামান চালায় পুলিশ। ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। এরপরই শুরু হয় লাঠি ও পাথর ছোড়া। তখনই কোন ভাবে আঘাত লাগে উলেন রায়ের।

ঘটনায় কৈলাস বিজয়বর্গীয় মন্তব্য করেন “বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত।” দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, “খুনের রাজনীতি করছে তৃণমূল কংগ্রেস।” তার আরও অভিযোগ ,” উলেন রায়ের মাথায় ও শরীর লাঠির আঘাত লেগেছিল। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলন কে রুখতে এত আক্রমণাত্মক হয়ে যাচ্ছে। আরো অনেক কর্মী আহত হয়েছেন অনেকে রাস্তায় কেউ হাসপাতালে। আগের সরকার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ছিলেন তাদের বিদায় হয়েছে। এই সরকারও আবার একই কাজ করছে।”

ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেছেন,” ফুলবাড়ি এলাকায় যা হয়েছে তা নিন্দনীয়। বাইরে থেকে সমাজবিরোধীদের এনে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বেআইনি সমাবেশ করছে বিজেপি। গুন্ডামি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাষায় জবাব দেবো। সমস্ত ফুটেজ মানুষের কাছে আছে।” গৌতম বাবু জানিয়েছেন কোনো বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে তার কাছে খবর নেই, বরং বহু পুলিশ ও সাধারণ মানুষ ঘটনায় আহত হয়েছেন।

শিলিগুড়ির তিনবাত্তি মোড়ে আরো একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তার গাড়িও ভাঙ্গা হয়েছে বলে অভিযোগ। মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভেঙ্গে এগিয়ে যায়। সেখানেও রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *