পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৪ সেপ্টেম্বর:
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনীতে বাড়ি তুলি দাসের। ছোটোবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি এক আলাদা আকর্ষণ ছিল তুলির, সেটা বুঝতে দেরি করেননি তার বাবা উত্তম দাস। তাই ছবি আঁকা শেখাতে ছোটবেলাতেই শিক্ষক অলক দাসের কাছে ভর্তি করে দেন। তুলির মধ্যে যে বিশেষ প্রতিভা রয়েছে সেটা বুঝেছিলেন অলকবাবু।
নানান জায়গায় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে, পুরস্কার জিতেছে তুলির হাতের তুলি।
তুলির এই প্রতিভা প্রশংসা কুড়িয়েছে বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের কাছ থেকে। কিছুদিন আগে অল বেঙ্গল সোসাইটি ও বিজয়-৭১ এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ছবিমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেশ কিছু প্রতিভাবান চিত্রশিল্পী আমন্ত্রিত হন। তুলির প্রতিভার কারণে এই আন্তর্জাতিক ছবি মেলাতে তুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। এই মেলায় বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করা হয় তুলিকে। তুলির আঁকা ছবি দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন বাংলাদেশের বিশিষ্ট চিত্র শিল্পীরা। পাশাপাশি নেপালে যাওয়ারও সুযোগ হয় তার।
কে জানত ঝাড়গ্রাম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে তুলি তার আঁকা ছবি নিয়ে নানান দেশ-বিদেশে আমন্ত্রিত হবে। তুলির এই সাফল্যে খুশির হাওয়া সাঁকরাইলজুড়ে। নানান সময়ে তুলির আঁকা ছবি খবরের শিরোনামেও উঠে এসেছে। তুলি নিজের ছবি নিয়ে ভবিষ্যতে আরো বড় জায়গায় এগিয়ে যেতে চায়, আর তার প্রতিটা স্বপ্ন যাতে পূরণ হয় তুলির বাবা উত্তম দাস সেই চেষ্টাই করে চলেছেন। উত্তম দাস গোপীবল্লভপুরে ইলেকট্রিক ডিপার্টমেন্টের এলটি ভ্যানে কন্ট্রাকচুয়াল স্কিল ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করেন। সামান্য বেতন হলেও যতটা পারেন সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। তাই আন্তর্জাতিক ছবি মেলা থেকে তুলি সম্মানিত হওয়ার পর কুলটিকরী আর্থ কেয়ার সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনে গিয়ে বেশ কিছু গাছ লাগান ও ওখানকার সবুজের পাঠশালার ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে বই, খাতা ও পেন তুলে দেন।
তুলির এই সাফল্যকে বাহবা দেন আর্থ কেয়ারের পক্ষ থেকে প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক কবি ও সাহিত্যিক প্রদীপ কুমার মাইতি, পরিবেশপ্রেমী প্রাক্তন শিক্ষক গৌর সাধন দাস চক্রবর্তী, কবি ও সমাজসেবী তপন দে, শিক্ষক সুমন মন্ডল, বিষ্ণু মুরমু সহ ছাত্র-ছাত্রীরা।