বিলুপ্তির পথে  সাঁওতালদের ভুয়াং নাচ

জে মাহাতো, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৫ অক্টোবর:
হারিয়ে যেতে বসেছে আদিবাসী সমাজের প্রাচীন ঘরানার নৃত্য শৈলী ভুয়াং নাচ। ভারতের আদিম জনজাতি সাঁওতালদের আদিপুরুষ মহিষাসুরকে শারদ উৎসবের নবমীর দিন বধ করা হয় বলে এই সময় তারা শোক পালন করে থাকেন। সেজন্য তাদের প্রাচীন ভুয়াং নাচের গানের শুরু থেকে হায়রে হায়রে বিলাপ শোনা যায়।

মাথায় ময়ূরের পালক এবং লাল পাড় হলুদ শাড়ি পরে ঝুমঝুমি, মাদল, কাঁসর, ঘন্টার বাজনার তালে তালে এই শোকের গান করে থাকেন তারা। এই নাচের সময় তাদের পূর্বপুরুষ মহিষাসুরের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানান বলে তারা মাথা নীচু করে নাচ গান করেন। যুগ যুগ ধরে দুর্গোৎসবের সময় তারা এভাবেই ভুয়াং নাচের গানে  হায়রে হায়রে বিলাপের মাধ্যমে দুর্গার সম্পূর্ণ বিপরীতে মহিষাসুরকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে আসছেন। তবে বাংলার আদিবাসী লোক সংস্কৃতির এই নাচ এখন আর খুব বেশি দেখা যায় না। এক দশক আগেও জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হুগলী ও অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই নাচের খুব চল ছিল। নবমী ও দশমীর দিন প্রায় প্রতিটি গ্রামে এই নাচের দল দেখা যেত। কালের স্রোতে ভাদু টুসু ও করম নাচের মতই হারিয়ে যেতে বসেছে আদিবাসী লোকসংস্কৃতির এই নাচের ধারাটি।

ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট সংস্কৃতিমনস্ক পিনাকি প্রসাদ রায় বলেন, পাশ্চাত্য দুনিয়ার চটুল গানের ঢেউয়ে বাংলা সংস্কৃতির পুতুল, করম, জাওয়া নাচের মতই বিলুপ্ত হতে বসেছে আদিবাসী সমাজের এই প্রাচীন নৃত্যধারা ভুয়াং নাচ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *