*মহাকুম্ভ ২০২৫*
আমাদের ভারত, ২১ জানুয়ারি: “বৈচিত্র্যের সন্ধান, আমাদের মনেরই সন্ধান। মানুষ খোঁজার ছলে আমরা মন খুঁজি। তাই বন্ধু যখন বিদ্রূপ করে বললে, ‘কেন যাচ্ছ কুম্ভমেলায়? ধর্ম করতে নাকি?’ ধর্মের নামে যে হিসাবে ধার্মিক বোঝায় তা নই, আবার বিধর্মীও নই। আমরা সেই মানিকবাবুর ‘লেবেল ক্রসিং’-এর নায়কের মতো।”
‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’-র গোড়ার দিকে এ কথা লিখেছিলেন কালকূট। উনি নিজেকে মানিকবাবুর ‘লেবেল ক্রসিং’-এর নায়কের মতো ভাবতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমি? কার মতোই বা ভাবব? তবে, কুম্ভে গিয়ে স্নান না করার দলে থাকব নিশ্চিতভাবে। কুম্ভে আমার যাওয়ার কারণ মানুষ দেখা। পারিপার্শ্বিক দৃশ্য, অনন্য পরিবেশের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হওয়া।
শুরু হয়ে গিয়েছে মহাকুম্ভ। সামাজিক মাধ্যম, ডিজিটালে হরেক ছবি, খবর, ভিডিও ভাসছে। লোকের মধ্যেও জাগছে কুম্ভ যাওয়ার আগ্রহ। সবার প্রশ্ন যাবেন কিভাবে? কোটি কোটি লোক। অত ট্রেন কোথায়? অত টেন্ট কোথায়?
মিতালি আগেই বলেছিল, ওরও প্রবল ইচ্ছে। আরএসএস-এর কার্যকর্তা জয়রামদা-র ওর পরিচিত। তাঁর সঙ্গে কথা বলে মিতালি আমাকেও ওনার সঙ্গে কথা বলতে বলল। প্রাক্তন সহকর্মী, ভ্রাতৃসম জয়দীপও (রায়) কেশব ভবনের অন্দরমহলের লোক। ওকে বললাম।
১৫ই সকালে ফোনে কুম্ভের প্রাথমিক পরিকল্পনার কথা শুনেই জয়দীপ লাফিয়ে উঠল। বলল, “আমিও যাব অশোকদা”। ও মিতালিরও ঘনিষ্ঠ। সূত্রধর হিসাবে সলতে পাকানোর দায়িত্বটা জয়দীপকেই নেওয়ার অনুরোধ করলাম। জয়দাকে আমি প্রণাম জানিয়ে রাখলাম হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায়।
অফিসের বস সন্তোষ মধুপকে সবিনয়ে কুম্ভ কভার করতে যাওয়ার আবেদন জানাতেই একবাক্যে বললেন, তথাস্তু! জানালেন, মেলায় হিন্দুস্থান সমাচারের টেন্টে সাংবাদিক হিসাবে আমার থাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। পরদিনই আমার ব্যাপারে হিন্দুস্থান সমাচারের উত্তরপ্রদেশের ব্যুরো চিফ রাজেশ তিওয়ারিকে জানিয়ে দিলেন। আমিও রাজেশজিকে জানালাম।
১৭/১ জয়দীপ ১০/২-র বিভূতি এক্সপ্রেসের টিকিট কাটল। ওয়েটিংয়ে ৩৩৮-৩৪০। ১৩ই ওই ট্রেনেই ফেরার টিকিটের ওয়েটিং ২৪১-২৫৩। অন্যান্য ট্রেনে নাকি ওয়েটিং আরও বেশি। ট্রেনের সম্ভাব্য ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় শঙ্কিত হয়েও আমরা তিনজন ঠিক করলাম, যাব।
একবার এক সাংবাদিক বিল গেটসকে প্রশ্ন করল যে আপনি এত ধনী হলেন কীভাবে? বিল গেটস কোনও উত্তর না দিয়ে পকেট থেকে একটি ব্ল্যাঙ্ক চেক ওই সাংবাদিকের হাতে দিয়ে বললেন, “এতে তোমার যা ইচ্ছে পরিমাণ বসিয়ে নাও।” বিল গেটস রসিকতা করছেন মনে করে সাংবাদিক বললেন, “না স্যর, আপনার সাফল্যের রহস্য জানতে চেয়েছিলাম”। বিল গেটস বললেন, “তুমি এখনই বিশ্বের ধনীতম সাংবাদিক হতে পারতে। সেই সুযোগটা হারালে। আমি কখনও সুযোগের হাতছাড়া করি না। এটাই আমার সাফল্যের মূলমন্ত্র”। ঘটনার সত্যাসত্য জানিনা। ফেসবুকে গেটসের ছবি-সহ পোস্টটা ১৯/১-এ জয়দীপকে শেয়ার করে লিখলাম, “তিনজন মিলে কুম্ভ যাওয়ার যে সুযোগ এসেছে। এই কারণে তা হাতছাড়া করতে চাই না।” ও জবাব দিল, “একদম ঠিক, খুব শিক্ষণীয়”।