Bankura, Job losses, “সম্মান ও চাকরি ফিরিয়ে দিন, নয়তো সপরিবারে স্বেচ্ছামৃ*ত্যুর অনুমতি দিন”, দাবি বাঁকুড়ার চাকরিহারাদের

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৬ এপ্রিল: ফিরিয়ে দিন সম্মান ও চাকরি, নয়তো স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতির দাবিতে পথে নামলেন আদালতের রায়ে কর্মহারা শিক্ষক- শিক্ষিকা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। রাজ্য সরকারের কাছে তাদের আবেদন, অযোগ্য বাছাই করে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগ নিতে হবে, তা নাহলে তাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিতে হবে। রামনবমীর আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় এই দাবি সামনে রেখে বাঁকুড়ায় বিক্ষোভে সামিল হন সদ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। বাঁকুড়ার নতুনচটির কৃষক বাজার এলাকায় জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান তারা।

উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় নিয়োগ দুর্নীতির দায়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিক্ষার চাকরি। বাঁকুড়া জেলায় সব মিলিয়ে চাকরি হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি শিক্ষক ও শিক্ষিকা। এই চাকরিহারারা তো বটেই, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চরম হতাশায় পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিন আক্ষেপের সঙ্গেই অনিতা দত্ত, পারমিতা চন্দ, তুষার গরাই ও প্রতিমা কুন্ডু সহ চাকরিহারাদের পরিবারের সদস্যরা জানান যে, দোষ কাদের, কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় বা মানসিক অবস্থা তাদের এখন নেই। চাকরি চুরির অপবাদে তাদের ছেলেমেয়েরা পাড়ায়, গ্রামে, শহরে পরিচিতদের কাছে মুখ দেখাতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে তারা বাধ্য হয়েই অযোগ্যদের বাছাই করে যোগ্যদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।

এই চাকরিহারা শিক্ষক- শিক্ষিকা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের একাংশের দাবি, যোগ্য হিসাবে চাকরি পেয়েও এখন শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের গাফিলাতির কারণে চাকরিহারা হতে হয়েছে। তাদের অভিযোগ, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সদ্য চাকরি হারানো সকলকেই চুরি করে চাকরি পেয়েছেন এমন অপবাদ শুনতে হচ্ছে। চুড়ান্ত হেনস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে অনেকেই। তাই তাদের দাবি, মানবিক হয়ে, স্বচ্ছতা বজায় রেখে, যোগ্যদের সসম্মানে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে, নাহলে তাদের সকলকে সপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিতে হবে। এই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করা হয়। এই বিক্ষোভ সভা ও মিছিল থেকে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যেও এভাবেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। তাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার সময় এসেছে। তা না হলে পরিনাম ভুগতে হবে রাজ্য সরকারকে। এবার যা কিছু ঘটবে তার দায় রাজ্য সরকারের।

এই প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য, ১ বৈশাখ এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন রাজ্যের চাকরিহারারা। ইতিমধ্যেই একজোট হয়ে ১ বৈশাখের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যকে। এতেও সমস্যার সমাধান না হলে একজোট হয়ে নবান্ন অভিযান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এদিকে বাঁকুড়া কৃষি বাজারের সামনে এই বিক্ষোভ ঘিরে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। তারা বিক্ষোভকারীদের দাবি সমর্থন করে মন্তব্য করেন যে, কাদের আড়াল করতে অযোগ্য বাছাই করে তালিকা আদালতে দেওয়া হচ্ছে না। মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য ২০ হাজার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *