kidnapper, bangaon, মধ্যমগ্রাম- বারাসতের পর বনগাঁ, ছেলেধরা সন্দেহে ভবঘুরেকে বেধড়ক মারধর

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৩ জুন: ছেলেধরা আতঙ্ক এবার বনগাঁতেও। আর তারই শিকার হলেন এক ভবঘুরে। ছেলেধরা সন্দেহে বেধড়ক মারধর করা হলো এক ভবঘুরেকে। প্রচন্ড আঘাতে অসুস্থ হওয়ায় প্রথমে তাকে বনগাঁ হাসপাতাল এবং পরে তাকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই বারাসত, অশোকনগরের পাশাপাশি বনগাঁতেও ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাচক্রে গত কয়েকদিনে একাধিক স্কুল পড়ুয়া হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায়। যদিও পুলিশ সূত্রে খবর, তারা প্রত্যেকেই আবার নিজে থেকে বাড়ি ফিরে এসেছে। সম্প্রতি বারাসতের একটি নামি স্কুলের সামনে ছেলেধরা সন্দেহে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আর তাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে আক্রান্ত হয় পুলিশও। বারাসতের পর একই ঘটনা ঘটে অশোকনগরে। সেখানেও ছেলেধরা সন্দেহে একজনকে গণপ্রহার করা হয়। সেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। এই আতঙ্ক থেকে এবার বাদ গেল না বনগাঁ শহরও।

জানাগেছে, শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁর ঠাকুরপল্লী এলাকায় এক অপরিচিত ভবঘুরেকে ইতস্তত ঘুরতে দেখা যায়। আর তাতেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করেন এলাকার মানুষ। তারপরেই মুখে মুখে ছড়িয়ে যায় ছেলেধরার গুজব। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে জড়ো হয়ে যান এলাকার বহু মানুষ। আর তারপরেই ওই ভবঘুরেকে আটক করে ছেলেধরা সন্দেহে পিটুনি শুরু হয়। খবর পেয়ে বনগাঁ থানা পুলিশ তাকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ওই ভবঘুরের আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, রাতেই তাকে বনগাঁ থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যেহেতু ভবঘুরে, তাই তার কোনও নাম-পরিচয় না মেলায় সমস্যায় পড়তে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। পরে পুলিশ সূত্রে জানা যায় ওই যুবকের নাম আসলাম মন্ডল।

স্থানীয় একটি ক্লাবের সম্পাদক নির্মলেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘সন্ধ্যাবেলায় এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তিকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। তার নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করা হলে, সে ঠিক করে বলতে পারেনি। আর তাতেই ছেলেধরা সন্দেহে তাকে মারধর করা হয়। আমরা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দিই। পুলিশ এসে তাকে গুরুতর জখম অবস্থায় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে।’

গত কয়েকদিন ধরেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বনগাঁতেও ‘ছেলেধরা’ নিয়ে একটা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, আর তার থেকেই বিভিন্ন রকম প্রচার চলছে। এই প্রচারের আদৌ কোনও সত্যতা আছে কিনা, তা যাচাই করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে সচেতন করে অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধ করা হোক, এমনটাই দাবি করছেন বনগাঁর শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *