পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ মার্চ: এই মুহূর্তে তৃণমূলকে হারাতে পারে একমাত্র তৃণমূলই, শুক্রবার ডেবরায় এক কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমন কথাই বললেন তৃণমূল প্রার্থী দেব। এদিন
ডেবরা বাজার থেকে ডেবরা অডিটোরিয়াম হল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী দেবের সমর্থনে রোড-শো হয়। পরে ডেবরা অডিটোরিয়াম হলে কর্মিসভায় যোগ দেন সাংসদ। সেই কর্মসূচি শেষে ডেবরা অডিটোরিয়াম হলে একটি সভার আয়োজন করে ডেবরা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেব বলেন, “এই মুহূর্তে তৃণমূলকে হারাতে পারে একমাত্র তৃণমূলই।”
দেবের এই মন্তব্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলেরও ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। বস্তুত, গত কয়েক মাসে বার বার ঘাটাল লোকসভার বেশ কিছু জায়গায় ক্ষোভের ছবি দেখা গিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে সমস্যা মেটাতে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করছে তৃণমূল। সভায় দেব বলেন, “সবাই নেতা হতে চান। কিন্তু একটা জিনিস বুঝেছি। বড় জিনিস হল সম্মান। কর্মীরা সম্মান চান।” তিনি আরও বলেন, “আপনারা যা যা বলবেন, আমি তাই তাই করব।”
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কেশপুর থেকে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ভোটে ‘লিড’ পেয়েছিলেন। ২০১৯-এ ‘লিড’ হয় ৯২ হাজারের। ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী আশাবাদী কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হলে তিনি কেশপুর থেকে, ডেবরা থেকে বেশি ‘লিড’ পাবেন। দেবের কথায়, “২০১৯ সালের অভিজ্ঞতা ভাল ছিল। আমি ভোট শিখেছিলাম। কেউ বলেছিলেন ৩০ হাজার লিড হবে। কেউ বলেছিলেন ৪০, কেউ বলেছিলেন ৫০ হাজার লিড হবে। ২০২৪ সালে এসে আমি একটা জিনিস শিখলাম…। ২০১৪-র লোকসভা, ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময় পার্টির হয়ে নানা জায়গায় ঘুরেছি। ২০২১ সালেও তাই করেছি। এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে, তৃণমূলের সংগঠন সবচেয়ে শক্তিশালী। আমাদের ধারেকাছে কেউ নেই। আমার মনে হয়, তৃণমূলকে অন্য কোনও দল হারাতে পারবে না। তৃণমূলকে হারাতে পারে শুধুমাত্র তৃণমূল।”
দেবকে এ-ও বলতে শোনা যায়, “২০১৯ সালে কী হয়েছে, সেটা অতীত। তবে কর্মীরা যদি সংঘবদ্ধ হন ডেবরা যা লিড দেবে, তা কেশপুরকেও ছাপিয়ে যেতে পারে। আমরা সমস্ত অভিমান ভুলে গিয়ে এক হতে পারি। তবেই সেটা সম্ভব।”
দেবের সঙ্গী ডেবরা ব্লক সভাপতি বিকাশ কর বলেন, “দেবের আজকের এই রোড শো দেখেছেন হিরণ। আজ থেকে উনি ভাবতে শুরু করুন কত লক্ষ ভোটে হারবেন। আজ থেকেই অঙ্ক কষা শুরু করুন হিরণ।” অন্যদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইঞা বলেন যে, কাজে কোনো ফাঁকি দেওয়া চলবে না। ডেবরা হচ্ছে সংযোগস্থল, ডেবরার উপর দিয়ে সবং, পিংলা, খড়্গপুর যেতে হয়, তাই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। এখন থেকে কোন রকম ফাঁকি নয়, এখন থেকে বুথে বুথে গিয়ে কাজ করুন, আমি সব মনিটরিং করবো।
এই কর্মসূচিতে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঁইঞা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবির, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শীতেস ধাড়া, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তি টুডু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।