সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ৯ ফেব্রুয়ারি: এবার কি মাথাহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় যোগ? গত পরশু রাতে সুফিয়া খাতুন নামে বাজিতপুরের এক গৃহবধূকে আটক করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। ওবায়দুল গাজীকে জিজ্ঞাসা করে তার নাম জানতে পারে পুলিশ। এখনও জেরায় ওবায়দুল জানাতে পারেনি, কোথায় মাথা রেখেছে। কিন্তু এই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের সন্দেহ হয়। তাই তাকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক তাঁর স্বামী।
সম্প্রতি দত্তপুকুরে মাঠের মধ্যে থেকে যুবকের মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বাজিতপুর গ্রামে উদ্ধার হয়েছিল অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের মুণ্ডহীন দেহ। দেহের একটি হাত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি পরিকল্পিত খুন বলে অনুমান পুলিশের। দেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর, খালে ডুবুরি নামিয়ে দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি চলে। এদিকে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর, রাত বাড়লে এখনও শুনশান হয়ে যায়। বলতে গেলে, বারাসতের ঠিক একটা স্টেশন পরে হলেও, বসবাসের বাড়িগুলির মাঝে এখনও ফাঁকা জায়গা রয়েছে। একদিকে যখন বাগদেবীর আরাধনায় ব্যস্ত সারা বাংলা, ঠিক তখনই মর্মান্তিক খবর প্রকাশ্যে এসেছে দত্তপুকুরে। এই ঘটনাকে ঘিরে কতগুলি প্রশ্ন উঠেছে যে, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে? খুনের আগে কি যুবককে খুব নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছিল? কেন এই হিংস্রতা? সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। তারপরেই আশা করা যায় প্রকৃত সত্য বাইরে আসবে।
রাজ্যে খুনের ঘটনায় যবনিকা কিছুতেই পড়ছে না। একের পর এক বিভীষিকাময় খবর প্রকাশ্যে আসছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। বিষয় যাই হোক না কেন, এখন কোনও কিছুই, কথায় আটকে নেই। যত্রতত্র অপরাধের প্রবণতা ধরা পড়ছে তির্যকভাবে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, জমি, যৌনতা, রাজনীতি, প্রোমোটিং ইস্যু থেকে শুরু করে প্রায় সব খাতেই, দরজায় কড়া নাড়ছে ‘অপরাধের হাত’। সদ্য কলকাতায় ঘটে যাওয়া তরুণীর উপর হামলায় এখনও আতঙ্কে কাঁটা অনেকেই। তারই মাঝে এবার সামনে এল দত্তপুকুরের ঘটনা। প্রমাণ লোপাটের জন্য, খুন করে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা অতীতেও প্রকাশ্যে এসেছিল। এমনকি কবর দেওয়ার ঘটনাও দেখেছিল এই বাংলা। তবে তারই পাশাপাশি, কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের সাক্ষীও এশহর। তাই অপরাধ করলে যে রেহাই নেই, তা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে দেশের সংবিধান। যদিও রাজনৈতিক ক্ষেত্র বাদ দিলে, শিহরণ জাগানো খুনের ঘটনা, নতুন বছরের শুরুতেই ঘটেছে। তাই কীভাবে মায়ের কোল অটুট থাকে, তা নিয়ে এবার কড়া প্রশাসনও।