শিশুদের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের উদ্যোগ, নতুন শিশু বান্ধব কর্নারের উদ্ধোধন আলিপুরদুয়ারে

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৩০ ডিসেম্বর: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল। প্রতিটি থানা এলাকাতে উদ্ধার হওয়া শিশুদের জন্য শিশুবান্ধব ঘর থাকতে হবে। একটি শিশু উদ্ধার হবার পর তার যত্ন শিশুদের মতই করতে হবে। এবার সেই শিশুবান্ধব ‘চাইল্ড কর্ণার’ তৈরি হল আলিপুরদুয়ার জেলায়। বুধবার জেলার পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে ‘চাইল্ড কর্ণার’ এর উদ্বোধন করেন জেলার ডিএসপি বর্ডার সরিতা পরিয়ার। পুলিশ কর্তারা আশাবাদী যে ওই কর্ণারে এখন থেকে শিশুরা অনেক মুক্ত মনে থাকতে পারবে।

উল্লেখ্য, নতুন জেলা আলিপুরদুয়ারে অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করল জেলা পুলিশ। জেলা সাইবারক্রাইম থানার একটি ঘরকে শিশুদের কথা মাথায় রেখেই বিশেষভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। ঘরের মধ্যেই দেওয়ালে উঠে এসেছে কার্টুনের জনপ্রিয় চরিত্র। আছে হরেক রকমের বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদের জন্য খেলনা। জানাগেছে,শিশু মনের ভীতি কাটাতে ঘরের মধ্যে খাঁকি উর্দি পরে ঢোকা বারণ। গোটা ঘরটিকে দেখলে কোনও ভাবেই থানার অফিস বলে মনে হবে না বাচ্চাদের। ঘরে থাকলেও কোনও ভাবেই শিশুমনে ভয়ভীতি আসবে না। মনে করবে না সে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার জেলায় শিশু, কিশোর, কিশোরীদের উদ্ধার হবার ঘটনা মাঝে মাঝেই ঘটে থাকে। অপরাধ করে ফেলেছে এমন বাচ্চাও ধরা পড়ে।সেক্ষেত্রে এখনো আলিপুরদুয়ার থেকে জলপাইগুড়ি নিয়ে যেতে হয় তাদের। সমস্যা বাড়ে যখন রাতের বেলা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। যখন কোনও বাচ্চা নিজের ঠিকানা,পরিচয় দিতে পারেনা তখন বিরম্বনা আরও বৃদ্ধি পায়। জানা গেছে, মহিলা পুলিশ কর্মীদের একাংশ চাইল্ড কর্নারের সাথেই থাকবেন। পুলিশ কর্তাদের একাংশ জানান, অনেক সময় উদ্ধার হওয়া শিশুদের আদালতের মাধ্যমে হোমে পাঠাতে গিয়ে একটা দিন কেটে যায় নানান আইনি জটিলতায়। তখন ওই শিশুদের একটা দিনের জন্যে থানায় রাখতে বাধ্য হয় পুলিশ। কিন্তু থানার চেনা ছবি শিশুমনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভীতির সঞ্চার করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে থাকে।এবার আর সেই সমস্যা হবে না।

ডিএসপি সরিতা পরিয়ার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “শিশুমন অত্যন্ত কোমল প্রকৃতির। তাই তাদের পরিচালনা করতে হয় অনেক সাবধানে। চাইল্ড কর্ণারের রঙিন পরিবেশ ওদের মধ্যে পুলিশি ভীতি কাটাতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।” উল্লেখ্য, পুলিশ, প্রশাসন, চাইল্ড প্রটেকশন কমিটি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন জেলাতে। বিভিন্ন সময় তার নজির উঠে এসেছে। আদিবাসী অধ্যুষিত, চা-বলয় ঘেরা জেলায় নারী, শিশু পাচারের ঘটনাও বারবার সামনে এসেছে।সেক্ষেত্রে নতুন চাইল্ড কর্নার গোটা জেলাকেই সুবিধা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *