আমাদের ভারত, ২৬ এপ্রিল: কেবল কথার কথাই নয়। বড় পদক্ষেপ করছে ভারত। যাতে পাকিস্তান মুখী নদনদী, নালাগুলি দিয়ে এক ফোঁটা জলও ওপারে না পৌঁছায়, তার জন্য ত্রিফলা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে চলতি গরমেই চরম বিপদে পড়বে পাকিস্তানের জনজীবন ও অর্থনীতি।
কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর পাটিল জানিয়েছেন, আমরা এখন ত্রিমুখী পরিকল্পনা নিয়েছি। যাতে পাকিস্তান এক ফোঁটাও জল না পায়। এর মধ্যে রয়েছে, দীর্ঘমেয়াদী, স্বল্প মেয়াদী এবং তৃতীয়টা হল মাঝারি মেয়াদের। এই তিন দফা পদক্ষেপের পাকিস্তানকে এক ফোঁটা জলও ছাড়বে না ভারত।
সিন্ধু জলচুক্তি আপাতত স্থগিত ঘোষণার পর দিন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করেন জলশক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে। সেখানেই ঠিক হয় শুধুমাত্র ঘোষণাতেই আটকে থাকলে চলবে না। অতি দ্রুত শীঘ্রই জলচুক্তি রদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তানের দিকে জল সরবরাহ ঠেকিয়ে দিতে নদীর গতিপথ রোধ করতে হবে। পাশাপাশি বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়া বন্ধ করে দিতে হবে। গরমকাল হাওয়ায় সুবিধা থাকলেও বর্ষাকাল পর্যন্ত তা কতদূর সম্ভব তা এখনো জানা যায়নি। তার জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত জল ভান্ডার গড়ে তোলা যা অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ এবং সময় সাপেক্ষ। এছাড়া স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদীর মধ্যে নতুন নতুন বাঁধ নির্মাণ রয়েছে। এর মধ্যে এই মুহূর্তে যেটা করা হতে চলেছে বলে খবর, তা হলো সিন্ধু জলচুক্তির অন্তর্গত দু’ দেশের নদীগুলির জল নিষ্কাশন আটকাতে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি করা, যাতে তার জল ধারণ ক্ষমতা বাড়বে। একই কাজ করা হবে জলাধার গুলিতেও। যাতে বাঁধের জলাধারণ ক্ষমতা আরো অনেক বেশি বাড়ে। যাতে পাকিস্তানের দিকে জল ছাড়ার প্রয়োজনই না পড়ে।
এছাড়াও কিশনগঙ্গা, ঝিলমের শাখা নদী এবং রাটলে, চেনাবের উপর নির্মীয়মান জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে পাকিস্তানের আপত্তি থাকলেও ভারত এবার আর তাতে পাত্তা দেবে না। এই প্রকল্পগুলির কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করাই এখন ভারতের লক্ষ্য।
দীর্ঘমেয়াদী একাধিক বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করা হবে। যাতে বিপুল পরিমাণ জল ধরে রাখা সম্ভব হয়। ওই জল যাতে ভারতের কৃষি বিদ্যুৎ তৈরির কাজে ব্যবহার করা যায়।
অন্যদিকে ভারতের এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া আসা অবশ্যম্ভাবী। বিশ্ব ব্যাঙ্ক কিংবা রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো সংগঠন থেকে চাপ আসতে পারে। তাই কেন্দ্র ইতিমধ্যেই একটি আইনি ও কূটনৈতিক কোর কমিটি গঠন করেছে। যারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে।