Flood, Water জল বন্দী জীবন, অথচ একবিন্দু জলের জন্য নিদারুণ হাহাকার

পার্থ খাঁড়া, পাঁশকুড়া, ২১ সেপ্টেম্বর: হঠাৎই অচেনা ঠেকছে চারপাশটা। প্রতিদিনের অভ্যেস মতো চারিদিকে ছড়িয়ে থাকা সবুজের সমারোহ উধাও। তার পরিবর্তে এলাকার দখল নিয়েছে বিপুল জলরাশি। যে দিকে চোখ যায় শুধু জল আর জল। কিন্তু এত জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে মাত্র একবিন্দু জলের জন্য হাহাকার সর্বত্র। কিভাবে মিলবে এক গ্লাস পানীয় জল তা ভেবেই কুল কিনারা পাচ্ছেন না অধিকাংশ মানুষ। এক বুক জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আর এক জল যন্ত্রণার দুঃসহ বেদনা নিয়েই রাত কাটছে পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। সেখানেই ত্রাতার ভূমিকায় নেমেছে এনডিআরএফ।

বুধবার ভোরের দিকে একাধিক জায়গায় কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারেও সেই জলের পরিমান বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকাগুলি এমনিতেই বর্ষার জলে টইটম্বুর ছিল। এবার বন্যার দাপটে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও এলাকায় একতলা বাড়ির গোটাটাই প্রায় জলের তলায় ডুবেছে। ইতিহাস গড়ে এবার কংসাবতীর জলে ডুবল ১৬নং জাতীয় সড়ক। এর জেরে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার বাসিন্দারা।

তবে বন্যার ৩টে দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এখনও বহু এলাকায় জলবন্দী মানুষের কাছে ত্রাণ পৌছাচ্ছেনা বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীরা। সব থেকে বেশী হাহাকার পড়েছে পানীয় জলের। অপেক্ষাকৃত উঁচু পাকাবাড়িতে অনেকেই আশ্রয় নিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। সঙ্গে থাকা চাল, ডাল ফুটিয়ে রান্নার চেষ্টা করলেও পানীয় জলের অভাবে সেই প্রচেষ্টাও দূরঅস্ত। এদিকে দুর্গত মানুষদের কাছে পৌঁছাতে ব্যাপক তৎপরতা বাড়িয়েছে এনডিআরএফ।

এনডিআরএফ-২ ব্যাটেলিয়ানের ইস্ট এবং ওয়েস্ট বিভাগের ৬টি দল পাঁশকুড়ায় উদ্ধারকাজে নেমেছেন বলে খবর। শুক্রবার তাঁরা দুর্গত প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে যান। সঙ্গে ছিল পানীয় জলের পাউচ, শুকনো খাবার। তবে খাবারের তুলনায় পানীয় জল নেওয়ার জন্যই হুড়োহুড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিপুল পরিমানে পানীয় জল এলাকাবাসীদের মধ্যে বিতরণ করেন তাঁরা। এনডিআরএফ সেকেন্ড ব্যাটেলিয়ানের ইন্সপেক্টর জাহির আব্বাস জানান, “পানীয় জল ও খাওয়ার নিয়ে আমরা প্রত্যন্ত এলাকায় ঢুকেছি। বহু মানুষ জলের মধ্যে আটকে রয়েছেন। তবে কেউ অসুস্থ থাকলে বা ডাঙায় ফিরতে চাইলে তাঁদের আমরা উদ্ধার করছি”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *