রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে হামলার পরিকল্পনা করছিল অসমে ধৃত ৫ জেএমবি জঙ্গি

সৌভিক বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৫ জানুয়ারি: প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পুলিশের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। অসমের বরপেটায় গ্রেফতার ৫ জেএমবি জঙ্গির সঙ্গে বর্ধমান-খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনার যোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে আলফার সঙ্গে নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনাও করেছিল এরা।

শুক্রবার গুয়াহাটির এনআইএ আদালতে চার্জশিট পেশ করে এনআইএ গোয়েন্দারা। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ও বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত শাহানুর আলমের সঙ্গে একসঙ্গে শিমুলিয়া মাদ্রাসাতে প্রশিক্ষণও নিয়েছিল বড়পেটায় ধৃত জেএমবি জঙ্গিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন। আরও বলা হয়েছে, বাংলা ও অসমের জেএমবি ইউনিট একসঙ্গে তৈরি হচ্ছিল। অসমে বসেই সমস্ত রাজ্যের জেএমবি ইউনিটকে একত্রিত করে শক্তিশালী হামলা করার ছক কষা হচ্ছিল। তারপরে গুছিয়ে দেশজুড়ে একটা বড়সড় হামলা করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

২০১৯ সালের ২৯ জুলাই গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অসমের বরপেটায় একটি বাড়িতে হানা দেয় অসম পুলিশ। বাড়ির মালিক হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়, সে একজন প্রশিক্ষিত জেএমবি জঙ্গি। তল্লাশি চালাতেই তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও বিস্ফোরক। উদ্ধার হয় জিহাদি বইপত্র। এছাড়াও অসমের একাধিক জঙ্গি সংঘটনের নথিপত্রও উদ্ধার হয়। তারমধ্যে একদিকে যেমন ছিল জেএমবি-র নথি, তেমনই আলফার নথিও উদ্ধার হয়। এরপর ধৃত হাফিজুরকে জেরা করেই রাতে আরও ৪ জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতরা হল ইয়াকুব আলি, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান ও মহম্মদ হাফিজ সফিকুল ইসলাম। এরপরই ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। ২০১৯ এর ডিসেম্বরে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

তদন্তে জানা যায়, ২০১৪-র খাগড়াগড় বিস্ফোরণকাণ্ডের কিছু আগেই শাহানুর আলমের সঙ্গে পরিচয় হয় বড়পেটার অভিযুক্তদের। শাহানুরই তাঁদের জেএমবি-তে নিযুক্ত করে। শিমুলিয়া মাদ্রাসাতে প্রশিক্ষণ দেয়। কিন্তু খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই এরা এদের মত পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সাথে এদের যোগের কথা জানতে পারে। আর সে কথাই উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *