আমাদের ভারত, ১ মার্চ: ভারতীয় কোস্ট গার্ড বা উপকূলরক্ষী বাহিনীর কর্মীদের বীরত্ব, কর্মক্ষেত্রে বিশেষ পরিষেবা প্রদান এবং প্রশংসনীয় পরিষেবা দেওয়ার জন্য পদক দেওয়া হলো। এই পদক প্রদানের অনুষ্ঠান হয়েছে নয়া দিল্লিতে ভারত মন্ডপমে। মোট ৩২ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তার মধ্যে একজন বঙ্গ সন্তান রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে দীপক রায় এই সম্মান পেয়েছেন। গোটা কর্মজীবনে একাধিক চ্যালেঞ্জ ও দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করে জয়ী হওয়ার জন্যেই তাঁকে এই পদক দেওয়া হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ৬টি রাষ্ট্রপতি তটরক্ষক পদক, বীরত্বের জন্য ১১টি তটরক্ষক পদক এবং বুদ্ধিদীপ্ত তথা প্রশংসিত পরিসেবার জন্য ১৫টি তটরক্ষক পদক সহ মোট ৩২টি পদক দেওয়া হয়। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পদক পান দীপক রায়।
১৯৮৬ সালে উপকূলরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন দীপকবাবু। দীর্ঘ ৩৭ বছরের কর্মজীবনে একাধিকবার এমন মুহূর্ত এসেছে যেখানে প্রাণ সংশয়ের অবকাশ থেকে যায়। মুম্বাই, আন্দামান, চেন্নাই সহ দেশের নানা প্রান্তে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছেন। কার্গিলের যুদ্ধে যাওয়ার জন্যেও তাদের তৈরি হতে হয়েছিল। সমুদ্র পথে চোরা শিকারিদের ধরা হোক বা বিরাট তৈলবাহী জাহাজ উদ্ধার, কিংবা মাঝ সমুদ্রে অসহায় অবস্থায় থাকা মৎস্যজীবীদের সাহায্য করা, প্রতিদিন এমনই বহু বহু চ্যালেঞ্জিং ঘটনাকে সাহস, বীরত্ব ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সামলেছেন দীপকবাবু। তাই তাঁকে সরকারের তরফে এই সম্মান জানানো হয়েছে।
তাঁকে এই পদক তুলে দেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই ৩২ জনের মধ্যে দীপক রায় এই পদক পান। পদক পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত তিনি।
এদিনের অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোস্টগার্ডের ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৯ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা আগের বছরের বাজেটের চেয়ে ২৬.৬ শতাংশ বেশি। মন্ত্রী বলেন, উপকূলরক্ষী বাহিনীর আধুনিকীকরণে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি জানান, সরকার ভারতীয় কোস্ট গার্ডের জন্য ১৪টি ফাস্ট প্যাট্রোল ভেসেল, ছয়টি এয়ার কুশন ভেসেল, ২২টি ইন্টারসেপ্টর বোট, ৬টি নেক্সট জেনারেশন অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল এবং ১৮টি নেক্সট জেনারেশন ফাস্ট পেট্রোল ভেসেল কেনার জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, আজ ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী বিশ্বের অন্যতম দক্ষ সামুদ্রিক বাহিনী এবং এটি কেবল দেশের মধ্যেই নয়, বিশ্বেও একটি বিশ্বস্ত বাহিনী হিসাবে পরিচিত হয়েছে, যা ভারতের জন্য অবশ্যই গর্বের। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক বাহিনী, বিশেষ করে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে সাইবার আক্রমণ, সিগন্যাল জ্যামিং, র্যাডার ডিসর্যাপশন
এবং জিপিএস স্পুফিংয়ের মতো অনেক প্রযুক্তিগত হুমকি মোকাবিলা করতে হবে। একদিকে ভারতীয় কোস্টগার্ড যেমন প্রথাগত হুমকির সম্মুখীন, অন্যদিকে নতুন উদ্ভূত প্রযুক্তিগত হুমকিও রয়েছে। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে উভয় দিক থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।