আমাদের ভারত, নদিয়া, ১০ মে: জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে প্রতিবেশীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বছর ২৫- এর পরীযায়ী শ্রমিক রাহুল সেখ। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে শান্তিপুর শহরের ২২ নং ওয়ার্ডের সাতভাই পাড়া এলাকায়।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, পরিযায়ী শ্রমিক রাহুল সেখ মহারাষ্ট্রের পুনেতে হোটেলে কর্মরত ছিল। গত বৃহস্পতিবার পুনে থেকে বাড়ি ফেরে। রাহুল সেখদের দুটি বাড়ি। গতকাল রাতে বসত বাড়ি থেকে খাওয়া দাওয়া করে প্রতিবেশী মদন সেখের বাড়ির পাশে রাহুল সেখের নতুন বাড়িতে ঘুমাতে যায়। সঙ্গে ভাইপো সামিন সেখকেও নিয়ে যায়। রাত ১২টা নাগাদ রাহুল সেখ শৌচকর্ম করতে রাস্তার ধারে যায়, তখন সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না । সেই সুযোগে প্রতিবেশী মদন সেখের গোটা পরিবার রাহুল সেখের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে পিছন থেকে আঘাত করে। ক্ষণিকের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রাহুল। ছুটে আসে প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন। তড়িঘড়ি তাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মাথায় একাধিক সেলাই পড়ে। তার চোখেও গুরুতর আঘাত লাগা। অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাকে শান্তিপুর থেকে কল্যানীর জহরলাল নেহেরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে রাহুল।
কী কারণে এতবড় আঘাত রাহুলের উপর? পরিবার ও প্রতিবেশী সুত্রে খবর, রাহুলের প্রতিবেশী মদন সেখের পরিবারের বাড়ির পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের পুরোনো বিবাদ ছিল। রাহুল সেখের পরিবার নিজের জমিতে পাঁচিল তুলে দেওয়ায় মদন সেখের পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা ছোট ও সরু হয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যার মধ্যে পড়ে। দীর্ঘদিন দুই প্রতিবেশীর বাড়ির মধ্যে কোনো পাঁচিল ছিল না। গতবছর বৈশাখ মাসে রাহুলের পরিবার পাঁচিল তুলে দেওয়ায় সমষ্যা তৈরি হয়েছে মদন সেখের পরিবারের। সেই আক্রোশের কারণে গতকাল রাতে রাহুল সেখের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মদনের পরিবার। রাস্তায় এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে। রাহুল সেখের অভিযোগের ভিত্তিতে শান্তিপুর থানার পুলিশ মদন সেখের পরিবারের তিনজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
যদিও মদন সেখের স্ত্রী সোনালী বিবি শান্তিপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমার পরিবারকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ চলছিল সেই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তার মধ্যে রাহুল ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। তবে মদন সেখের পরিবারের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে প্রতিবেশী থেকে শুরু করে রাহুল সেখের পরিবার। তারা বলেন, আইনের হাত থেকে বাঁচতে এই অভিযোগ করছে। দুই পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।