সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৫ অক্টোবর: তৃণমূলের মিছিলে আসছেন, অথচ ভোট দিচ্ছেন বিজেপিকে। আপনাদের লজ্জা থাকা দরকার। নেতাদের তেল মারবো আর পার্টিটাকে হারাবো এটা হতে দেব না। তৃণমূল জেলা সভাপতির এই মন্তব্যে দলীয় স্তরেই শুধু নয়, রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
আজ শালতোড়া বিধানসভার গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লক-২ এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায় এই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে, সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। তারাও জানেন, না হলে দলটা শালতোড়ায় হেরে যাবে কেন? তারাশঙ্করবাবু আসলে এই মন্তব্য করে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে ফের প্রকাশ্যে সরব হন।
গঙ্গাজলঘাঁটির মতোই খাতড়ায় বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে এদিন একই ভাবে সরব হতে দেখা যায় তাঁকে। দলের ছেলেরাই দলের পিছনে লাগছে, আর তাতেই তৃণমূলের হার হচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যের যে জেলাগুলিতে তৃণমূলের সব থেকে খারাপ ফল হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া। জেলার ১২টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনেই হার হয়েছিল তৃণমূলের। গত লোকসভা নির্বাচনেও জেলার দুটি আসনের মধ্যে একটিতে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। একের পর এক নির্বাচনে তৃণমূলের হারের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই দায়ী।
বিজেপি নেতা প্রদীপ্ত বহ্নি ঘোষ তারাশঙ্কর বাবুর এই স্বীকারোক্তি প্রসঙ্গে বলেন যে, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকুক বা না থাকুক, শালতোড়া বিধানসভায় জয়ী হয়েছিল বিজেপি। আগামী দিনেও হবে।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস দত্তও একই ভাবে বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি শুধু গঙ্গাজলঘাঁটি, খাতড়া বা রানিবাঁধ বিধানসভায় নয়, সারা রাজ্যেই সমানভাবে রয়েছে। গত নির্বাচনগুলির মতো ২০২৬- এর নির্বাচনেও এলাকার মানুষ তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করবে।
অন্যদিকে বিজয়া সম্মেলনীর মঞ্চগুলিতে তৃণমূলের এই স্বীকারোক্তি ঘিরে জেলাজুড়ে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে। তাদের মতে, দলের ভেতর থেকেই এমন মন্তব্য তৃণমূলকে সংগঠনগত ভাবে ও জনগণের কাছে আরও দুর্বল করে তুলবে।

