বালুরঘাটে পঞ্চায়েত সমতির সভাপতির নিজের এলাকাতেই বেহাল রাস্তা, ধানের চারা লাগিয়ে অভিনব প্রতিবাদ মহিলাদের

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২৬ জুন: খোদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নিজের সংসদেই বেহাল রাস্তা নিয়ে প্রতিবাদ মহিলাদের। ধানের চারা লাগিয়ে অভিনব আন্দোলন বাসিন্দাদের। নিত্য যন্ত্রণার শিকার হয়েই কাঁচা রাস্তায় এদিন ধানের চারা লাগান মহিলারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাটের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজুয়া সংসদের ধরমপুর এলাকার। রবিবার সকাল থেকে এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে এলাকায়। বেহাল রাস্তা ও তার জেরে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা স্বীকার খোদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির। তবে দীর্ঘ বছরেও কেন তার সমাধান হয়নি? তার উত্তর দিতে পারেননি কল্পনা কিস্কু।

গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘ বাম আমল থেকেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বোয়ালদাড় অঞ্চলের রাজুয়া মোড় থেকে ভাইরামপাড়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তা। প্রতিদিন যে এলাকা দিয়েই চলাচল করেন ধরমপুর, ঘোড়কাডাঙা, আইসর,খয়রাকোল সহ প্রায় সাতটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এলাকায় রয়েছে প্রাথমিক স্কুল থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার ও রেশনের দোকান। আদিবাসী অধ্যুষিত ওই এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ হওয়ায় প্রতিনিয়তই তাদের ছুটতে হয় শহরে। আর যে রাস্তা দিয়ে যেতেই চরম সমস্যায় পড়েন তারা। ভোট যায়, ভোট আসে, শুধুই মেলে নেতা- মন্ত্রীদের আশ্বাস। বাম আমল থেকে ডান আমল, আজও সেই রাস্তার সমাধান না হওয়ায় গ্রামে ঢুকতে ভয় পান অনেকেই। রাস্তার কারণে ভেঙে যাচ্ছে গ্রামের ছেলে মেয়েদের বিয়ের সম্পর্কও। শুধু তাই নয়, রাস্তার কারণে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য গাড়ি ঢুকতে না পারায় কাঁধে করেই হাসপাতালে আসতে হয় রোগীদের। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলাপরিষদ কোথাও জানিয়ে ফল পাননি বাসিন্দারা। নিজের সংসদ এলাকার মানুষজনদের দেওয়া প্রতিশ্রতিও পূরণ করেননি খোদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। আর তার জেরেই এদিন একপ্রকার ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার মহিলারা বেহাল রাস্তার উপরে ধানের চারা রোপণ করে অভিনব প্রতিবাদ জানান। দাবি তোলা হয় পাকা রাস্তারও।

এলাকার বাসিন্দা, বেবি মহন্ত, শুভ মহন্ত ও সঞ্জীব মন্ডলরা বলেন, বাম আমল থেকেই এই রাস্তার বেহাল অবস্থা। ভোটের সময় নেতা-মন্ত্রীরা আসে আর প্রতিশ্রুতি দেয়। রাস্তার কারণে গ্রামের ছেলে মেয়েদের শহরে বিয়ে হচ্ছে না। রাত বিরেতে প্রসূতি মহিলাদের একপ্রকার ঘাড়ে করে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। সমস্ত পঞ্চায়েত স্তরে জানিয়েও কোনো সমাধান না হওয়ায় এদিন তারা এমন আন্দোলন বেছে নিয়েছেন।

যদিও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কল্পনা কিস্কু এলাকার মানুষের সমস্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, সমস্ত প্রজেক্টে ওই রাস্তার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু এতদিনেও বেহাল ওই রাস্তায় চলাচলের জন্য পঞ্চায়েত থেকে কেন কোনো অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *