গঙ্গারামপুরে মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার শিক্ষিকা, দড়ি দিয়ে হাতপা বেঁধে কুকুরের মতো টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেলেন তৃণমূলের নেতারা

আমাদের ভারত , বালুরঘাট, ২ ফেব্রুয়ারি: ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর দিয়ে জোর করে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়ায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হলেন এক শিক্ষিকা। মারধরের পাশাপাশি দড়ি দিয়ে কুকুরের মতো বেঁধে টেনে হিঁচড়ে প্রকাশ্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলেন তৃণমূলের নেতারা। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নেওয়াই নয় ওই শিক্ষিকার শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূলের উপপ্রধান সহ তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মারধর করা হয়েছে মহিলার দিদিকেও। প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে শিক্ষিকা স্মৃতিকনা দাসকে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের নন্দনপুর গ্রামের এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় গঙ্গারামপুরের কালদিঘি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই মহিলা। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরলেই বিষয়টি নিয়ে গঙ্গারামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

জানাগিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার মাধ্যমে নন্দনপুর থেকে হাপুনিয়া পর্যন্ত রাস্তা তৈরি উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ। গত একবছর আগে ওই রাস্তার কাজ শুরু হলেও আইনি জটিলতায় মাঝ পথে তা আটকে গিয়েছিল। সূত্রের খবর, সমস্যা মিটিয়ে পুনরায় ওই রাস্তার কাজ শুরু হলেও এলাকায় বিজেপির কার্যকর্তা হিসাবে পরিচিত পেশায় শিক্ষকা স্মৃতিকনা দাসের সম্পত্তির উপর দিয়ে কাজ করার চেষ্টা হচ্ছিল। যার বিরোধিতা করছিলেন ওই মহিলা। শনিবার দুপুরে রাস্তা তৈরিতে বাধা দেওয়া মাত্র স্থানীয় তৃণমূলের উপপ্রধান অমল সরকার সহ তাঁর দলবল তপন শীল, উজ্জ্বল সরকার, রতন শীল ও গোবিন্দ শীল সহ বেশকয়েকজন ওই শিক্ষিকাকে মারধর করে। সেই সময় তাঁকে বাঁচাতে গেলে স্মৃতিকনার দিদি সোমা দাসকেও মারধর করা হয়। এমনকি দুজনকেই দড়ি দিয়ে বেঁধে কুকুরের মতো টানতে টানতে রাস্তা থেকে খানিকটা দূরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বাড়ির সামনে নিয়ে যায়। এরপর গেটের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। মধ্যযুগীয় বর্বরতার এমন নিদর্শনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে জেলা জুড়ে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। মুখে কুলুপ পুলিশ প্রশাসনের।

বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, তৃণমূলের প্রধান উপপ্রধান সহ দুষ্কৃতীদের গুন্ডামি প্রকাশ্যে এসেছে এই ঘটনায়। অবিলম্বে পুলিশ প্রশাসনকে এই ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অতীতেও দেখাগেছে মহলাদের ওপর অত্যাচার হলে সেই শাসকের পতন অনিবার্য। তৃণমূলেরও পতনের সময় এসেছে।

আক্রান্ত মহিলা স্মৃতিকনা দাস জানিয়েছেন, তিনি রাস্তার ১২ ফুট জায়গা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারচেয়েও বেশী জায়গা দখল করে রাস্তা তৈরির চেষ্টা হচ্ছিল। যার প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে মারধর সহ শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। তাঁকে বাঁচাতে যাওয়ায় তাঁর দিদিকেও মারধর করে দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে হিঁচড়ে রাস্তা থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
দেখুন সেই ভিডিও
……………………………………
https://youtu.be/y_2tI7Q5BhM

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *