ছবি: নিহতের ছেলে ও স্বামী।
গোপাল রায়, আমাদের ভারত, আরামবাগ, ৮ মার্চ: সালিশি সভায় এক মহিলাকে পিটিয়ে মারায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল আরামবাগ। ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাফ এগিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃত মহিলার নাম অসরা বেগম(৪৮)। এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে হুগলির আরামবাগের মাধবপুর অঞ্চলের বাঁশরী চক এলাকায়।
মিতার ছেলে সেখ আসাদুল জানান, বছরখানেক আগে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য কুতুবুদ্দিন মল্লিকের বাবা বাদল মল্লিক খুন হন। আসাদুল কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। তিনি কয়েকদিন আগে বাড়ি ফেরেছে। বাড়ি ফেরার পর থেকে তাকে বিভিন্ন রকম ভাবে হেনস্তা ও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ, বাদল মল্লিকের খুনের ঘটনায় পঞ্চায়েত সদস্য কুতুব মল্লিকের ভাই শামসুদ্দিন আসাদুলের পরিবারকে ও তাকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করত। হুমকির ভয়ে তিনি গৃহবন্দি হয়ে থাকতেন। অভিযোগ, শামসুদ্দিন তাঁর বোনকে বিয়ে করার জন্য ওই পরিবারকে চাপ দিচ্ছিলেন, তার সঙ্গে মারধরের হুমকি দিতেন। এই নিয়ে শনিবার রাতে একটি সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল।
সালিশি সভায় আসাদুলের পরিবার বিয়ের সম্মতি দেননি। তারপরেই ওই সালিশি সভায় আসাদুল ও তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। আসাদুলের মা আশরা বেগম ছেলেকে ও তাঁর স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর পরেই গোটা হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে ছুটে যান আরামবাগ পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। পঞ্চায়েত সদস্য কুতুববুদ্দিন সালিশি সভার কথা স্বীকার করে জানান, আশরা বেগমের হার্টের রোগ ছিল। হার্টএটাকে মারা যান। তবে তিনি এই ঘটনায় কোনোভাবে জড়িত নন। ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এই ঘটনায় মোট নয় জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আরামবাগ থানায়। পুলিশ একজনকে আটক করেছে। এলাকা উত্তপ্ত থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ঘটনায় তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি কমল কুশারী বলেন, বিষয়টি জানি, পুলিশ বিষয়টি দেখছে। বিজেপির আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, রাজনৈতিক খুন-খারাপি ও মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলা তৃণমূল কংগ্রেসের রক্তে আছে। পুলিশ প্রশাসনে আস্থা হারিয়ে একজন পঞ্চায়েত সদস্য কিভাবে সালিশি সভা বসাতে পারেন এটা আমার জানা নেই। পুলিশ দোষীদের ধরে আইনি পদক্ষেপ নেবে আশা করি।
জেলা পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।