বনগাঁয় স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত, পলাতক স্বামী

সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১৩ জানুয়ারি: মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে খুন করল স্বামী। আর এই ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় স্বামী। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার কালুপুরের খড়ের মাঠ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম পূর্ণিমা মণ্ডল (৪৬)। অভিযুক্ত স্বামী বিশ্বজিৎ মণ্ডল পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বনগাঁর চড়ুইগাছি এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মন্ডলের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় নবদ্বীপের বাসিন্দা পূর্ণিমা মন্ডলের। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক অশান্তি লেগে থাকতো। অভিযোগ, বিশ্বজিৎ ঠিকমতো কাজ করতো না। স্বাভাবিকভাবেই সে সংসারে টাকাপয়সাও ঠিকমতো দিত না। আর তাই নিয়েই মূলত সংসারে অশান্তি। প্রতিবাদ করলেই স্ত্রী পূর্ণিমার কপালে জুটতো মারধর। দুই মেয়ের মুখ চেয়ে সংসারে মুখ বুজে পড়েছিল পূর্ণিমা। জুয়া এবং নেশায় আসক্ত থাকায় সমস্যা তীব্রতর হতে থাকে। দুই মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকতে শেষপর্যন্ত পরিচারিকার কাজ নেন পূর্ণিমা। আর এভাবেই বড় মেয়ে মৌ মন্ডলকে বিয়েও দিয়েছিলেন। বনগাঁর খড়ের মাঠ এলাকায় বড় মেয়ের বিয়ে হয়।

সম্প্রতি বিশ্বজিতের সঙ্গে পূর্ণিমার অশান্তি চরমে পৌঁছালে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিকল্পনা নেন পূর্ণিমা। অশান্তির হাত থেকে রক্ষা পেতে পূর্ণিমা বেশ কিছুদিন ধরে বড় মেয়ের কাছেই থাকতেন। শুক্রবার রাতে সেখানেই হাজির হয় বিশ্বজিৎ। অভিযোগ, খড়ের মাঠ এলাকায় বড় মেয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বিশ্বজিৎ পূর্ণিমাকে ছুরি দিয়ে একাধিকবার এলোপাথারি আঘাত করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় বড় মেয়ে বা তাঁর শ্বশুর বাড়ির কেউ বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। বেশ কিছুক্ষণ পর বড় মেয়ে মৌ বাড়ি ফিরে দেখেন, তাঁর মা খাটে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় তাকে তড়িঘড়ি বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর বড় মেয়ে মৌ বাবার বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় লিখিত আকারে একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্বামী বিশ্বজিতের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *