রাজেন রায়, কলকাতা, ২৪ ডিসেম্বর: একদিকে বিশ্বভারতী শতবর্ষে মুখ্যমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা চরমে। তারমধ্যে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করে তাকে আঞ্চলিক গন্ডিতে বেঁধে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে, এমন দাবি করল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিশ্বভারতী শতবর্ষে ভার্চুয়াল মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কিছু বক্তব্য রাখেন। আর এই বক্তব্য নিয়ে ঘোর আপত্তি শাসকদল তৃণমূলের। অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু৷
এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের গুজরাত যোগ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কবিগুরুর গুজরাত যোগ এই কারণেই বার বার মনে করা প্রয়োজন কারণ তার সঙ্গে এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনার মিল পাওয়া যায়৷ বিবিধতায় ভরা হলেও পরস্পরের থেকে আমাদের দেশবাসী কীভাবে শিক্ষা নিতে পারেন, তাও বোঝা যায়৷ গুরুদেবের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন আইসিএস-এ ছিলেন তখন গুজরাতের আমেদাবাদেও কর্মরত ছিলেন তিনি৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে বেশ কয়েকবার গুজরাতে গিয়েছিলেন৷ বেশ দীর্ঘ সময় সেখানে ছিলেন তিনি৷ গুজরাতে দীর্ঘ সময় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ৷ ক্ষুধিত পাষাণের একটি অংশ এবং দু’টি জনপ্রিয় কবিতাও গুজরাতে বসেই রচনা করেন তিনি৷
এই প্রসঙ্গেই সতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘গুজরাতি মহিলারা শাড়ির আঁচল ডানদিকে পরতেন৷ কিন্তু তাতে কাজ করতে অসুবিধা হত৷ জ্ঞানদানন্দিনী দেবী সেটি লক্ষ্য করেন৷ এর পরই তাঁর মাথায় শাড়ির আঁচল বাঁদিকে রাখার ভাবনা আসে। আমার সঠিক জানা নেই, কিন্তু শাড়ির আঁচল বাঁদিকে রাখার প্রচলন সম্ভবত জ্ঞানদানন্দিনী দেবীই শুরু করেন৷’
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এই তথ্যেই ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাত্য বসু৷ তিনি বলেন, ‘সতেন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজদা ছিলেন৷ কিন্তু আগাগোড়া তাঁকে বড়দা বলে গেলেন প্রধানমন্ত্রী৷ আর সতেন্দ্রনাথের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনীকে বললেন জ্ঞানন্দিনী৷ জ্ঞানদানন্দিনী দেবীকে দেখেই যে গুজরাতি মহিলারা শাড়ির আঁচল বাঁদিকে পরতে শুরু করেন, একথা আংশিক সত্যি৷ কিন্তু পূর্ণ সত্যিটা হল যে গুজরাতি মহিলাদের পাশাপাশি পার্সি নারীদের থেকেও শাড়ির আঁচল বাঁদিকে ফেলার বিষয়টি গ্রহণ করেছিলেন জ্ঞানদানন্দিনী দেবী৷ কিন্তু পার্সি মহিলাদের নাম তো প্রধানমন্ত্রী মুখে নেবেন না৷ কেন বার বার বার বার গুজরাত শব্দ তাঁর মুখে উঠে এসেছে৷ গুজরাতের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগ প্রমাণ করতে প্রধানমন্ত্রী এত মরিয়া কেন?’