আমাদের ভারত, ৯ নভেম্বর: চারদিন নিখোঁজ থাকার পর বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে উদ্ধার হয়েছে বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ। মথুরাপুর সংগঠনিক জেলা বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়া সেলের মিডিয়া কনভেনারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সোমবার রাত থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছে পরিবার। পুলিশ শুক্রবার দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে তার দেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি মর্গে পাঠানো হয়েছে।এই ঘটনায় পুলিশ সঠিক সময়ে পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর প্রশ্ন, ফোনের লোকেশন ধরে কেন নিখোঁজ দলীয় কর্মীকে পুলিশ খোঁজার চেষ্টা করল না? তাঁর অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকার পুলিশ বলেই এতটা নিষ্ক্রীয়।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিহতর ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন বালুরঘাট থেকে। তিনি জানান, নিহতের পরিবারের পাশে রয়েছে দল। সবরকম সাহায্য করা হবে। পরিবারের দাবি মেনে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত যাতে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে করানো যায় তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানান সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, পৃথ্বীরাজ অত্যন্ত নিরীহ ছিলেন। তাকে খুন করে দেহ পার্টি অফিসে রেখে যাওয়া হয়েছে অথবা পার্টি অফিসের মধ্যেই তাকে খুন করা হয়েছে। চার দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। ওর ভাইয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছি। আমরা সঠিক তদন্ত চাইছি। দোষীদের গ্রেপ্তার করা হোক। খুনের নেপথ্যে তৃণমূলের হাত থাকতে পারে। পুলিশ কেন ফোনের লোকেশন দেখে ওকে খুঁজে বার করতে পারল না? পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ওই এলাকার পুলিশ অপদার্থ হয়ে রয়েছে। দল নিহতের পরিবারের পাশে আছে আর্থিক সাহায্য করা হবে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার অন্তর্গত দ্বীপের মোড় এলাকায় পৃথ্বীরাজ নস্কর নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে দলীয় কার্যালয় থেকে। কয়েক বছর আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে সক্রিয় ভাবেই দলের কাজ করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃথ্বীরাজের কাছে সব সময় তিনটি ফোন থাকতো। রবিবার বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান ছিল। বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছিলেন তিনি। তারপর সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি। তার তিনটি ফোনেই বাড়ি থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু ফোন বেজে যায়।
পরিবারের অভিযোগ, ফোনটি কখনো চালু থাকছিল, আবার কখনো তা বন্ধ রাখা হচ্ছিল। ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিবার।
পৃথ্বীরাজের পরিবারের তরফে বৃহস্পতিবার উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে তার দেহ পড়ে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তালা ভেঙ্গে উদ্ধার হয় দেহ। তা ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে। ঘটনার পর মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
কেন এই হত্যা তা খতিয়ে দেখতে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। এটি কোনো রাজনৈতিক হত্যা কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।