আমাদের ভারত,১০ ফেব্রুয়ারি: বর্ষা নয় কিন্তু বাঙালির পাত আলো করছে রূপালি ইলিশ। গড়িয়াহাট কিংবা মানিকতলা, হাওড়া কিংবা বর্ধমানের বাজার। সব জায়গাতেই ইলিশের যোগান যথেষ্ট। তাও বেশ প্রমাণ সাইজের। ৮০০-৯০০ গ্রাম কিংবা তার ওপরেও। অর্থাৎ ১২০০-১৩০০ গ্রামের ইলিশ ও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
দীঘা, বকখালি, ডায়মন্ড হারবার, ফ্রেজারগঞ্জের মৎস্যজীবীদের অভিজ্ঞতা বলছে ইলিশ মাছ কিন্তু এই সময় তেমন একটা উঠতোনা। অন্যান্য বছর সরস্বতী পূজায় জোড়া ইলিশের যাত্রা করতে হতো হিমঘরের মাছ দিয়ে। কিন্তু এবার তা হয়েছে একেবারে কাঁচা ইলিশেই।মানে টাটকা রুপোলি শস্য দিয়ে সরস্বতী পুজো সেরেছে বাঙালি।
এই সময় মৎস্যজীবীদের জালে ইলিশ ধরা পড়া একেবারে প্রাকৃতিক নিয়মের বিপরীত। মৎস্যজীবীরা বলছেন, এই সময় এত পরিমাণে ইলিশ কোন বছর ওঠেনা। এবার এত ইলিশ ধরা পড়াটা সত্যিই একটা অস্বাভাবিক ঘটনা। গত কুড়ি বছরে এই ঘটনা কেউ দেখেনি। মৎস্যজীবীদের দাবি বর্ষার সময় ইলিশ ধরা পড়লেও তার মধ্যে প্রমাণ সাইজের ইলিশ তেমন পাওয়া যায় নি এবার খুব একটা। কিন্তু সেখানে এখন ধরা পড়ছে বড় বড় ইলিশ।
ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় ১৫-২০ টি করে এক একটি নৌকায় ইলিশ ধরা পড়ছে। অথচ মরসুমের সময় ৭-৮ দিনে বড়জোর আনুমানিক ৩০০-৪০০ কেজি ওজনের ইলিশ উঠেছে। যা শহর কিংবা শহরতলীর বাজারে চাহিদা কোনোভাবেই মেটাতে পারে নি।
তাহলে শহরতলির বাজারে এখন ইলিশ কোথা থেকে আসছে? বাজারের পাইকাররা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে বনগাঁ সীমান্ত হয়ে ভালো পরিমাণে প্রমাণ সাইজের ইলিশ ডুকছে। অন্য বছর এমনটা হয় না। আর অসময়ে ইলিশের স্বাদ কিন্তু মরসুমের ইলিশের স্বাদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। বাংলাদেশের নদীতে প্রচুর বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়েছে। বাংলাদেশের কাঁচা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ফলে হিমঘরের ইলিশ এখন আর বেরোচ্ছে না। কারণ কাঁচা ইলিশ ছেড়ে হিমঘরের ইলিশ খাবে কে? তাও আবার ১ কেজির উপর ওজনের? দাম ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা। অথচ মরশুমে ইলিশের যোগান ছিল এর মাত্র ১০-২০ শতাংশ।
তবে যে কোন কারনেই হোক না কেন বাঙালি কিন্তু অসময়ে ইলিশ পেয়ে নিতান্তই খুশি। ইলিশ ভাপা কিংবা বেগুন দিয়ে ইলিশের ঝোল শীতের দুপুরে বাঙালির গরম ভাত জাস্ট জমে গেছে।