আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ১০ এপ্রিল: স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে মুম্বইয়ের টাটা হাসপাতালে গিয়ে আটকে পড়েছেন একই পরিবারের চার জন। সরকারি বেসকারি বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেও মেলেনি সাহায্য। ফলে একদিকে চলছে অর্ধাহার, অন্যদিকে ভাড়া গুনতে না পারায় তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে হোটেল মালিক। দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের ঘোষগ্রামের ওই পরিবার।
উৎপল চক্রবর্তী। বাড়ি বীরভূমের মল্লারপুর থানার ঘোষগ্রামে। স্ত্রীর জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ১৪ মার্চ মুম্বইয়ের টাটা ক্যান্সার হাসপাতাল যান চারজন মিলে। মুম্বইয়ের নগাঁও, দাদার কেশরবাগ বিল্ডিং, বিজে ডেভরুখার রোডের একটি হোটেলে তারা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফেরার আগেই দেশে লকডাউন শুরু হয়ে যায়। ফলে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে হোটেল ভাড়া দিয়ে পেট চালাতে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন বাড়ি ফেরা তো দূরের কথা দুবেলা অন্ন সংস্থানেরও সামর্থ্য নেই তাদের। ভিডিও বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। লিখিতভাবে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছিল ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে। কিন্তু এখন সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনও সাহায্য পৌঁছয়নি তাদের কাছে।
উৎপলবাবু বলেন, “পানীয় জলের অভাব। খাবার কিচ্ছু নেই। কিছু দিন আগে মজুত করা যা ছিল তা সামান্য খেয়ে থাকতে হচ্ছে। হোটেল মালিক বলে দিয়েছে প্রতিদিন ১২০০ টাকা করে ভাড়া দিতে হবে। চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে। কিভাবে এখান থেকে বাড়ি ফিরব বুঝতে পারছি না। যত দিন যাচ্ছে চিন্তায় স্ত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে”।
ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গোরাচাঁদ বর্মণ বলেন, “আমি আবেদন পত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি”। কিন্তু সেই আবেদন কোথায় আটকে রয়েছে জানা নেই কারও। ফলে অর্ধাহারে, ঘোর দুশ্চিন্তায় বন্দি দশায় দিন কাটছে চক্রবর্তী পরিবারে।