করোনা পরিস্থিতিতে আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন ও হোম কোয়ারেন্টাইন কি, কখন দরকার?

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২১ মার্চ: করোনা আতঙ্কে কার্যত ঘুম ছুটেছে গোটা বিশ্বের। সেলিব্রিটি থেকে হতদরিদ্র কোনও কিছুই বিচার না করে সবার শরীরেই বাসা বাঁধছে মারণ ভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সকাল ৭টা- রাত ৯টা পর্যন্ত ‘জনতা কারফিউ’-এর ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্দেশ্য একটাই, ক্রমাগত একে অপরের সংস্পর্শে আসা মানুষজনকে একদিনের জন্য হলেও ঘরে আটকে রেখে ভাইরাসের ক্রমাগত বেড়ে চলা শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই চলছে আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন বা হোম কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতি। কিন্তু আসলে এগুলি কি, এগুলির মধ্যে সুক্ষ্ম পার্থক্যই বা কোথায়? আসুন জেনে নেওয়া যাক. . .

আইসোলেশন: কারও শরীরে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পেলে, লালারসের টেস্টের রিপোর্ট করোনা পজিটিভ হলে তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। আইসোলেশনের সময় চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে থাকতে হবে রোগীকে। অন্য রোগীদের কথা ভেবে হাসপাতালে আলাদা জায়গা তৈরি করা হয় এঁদের জন্য। অন্তত ১৪ দিনের মেয়াদে আইসোলেশন চলে। অসুখের গতিপ্রকৃতি দেখে তা বাড়ানোও হয়।

সকলেই জানেন, এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই সময় কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এবং পথ্য দিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। কারণ মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এই ভাইরাসকে নির্মূল করতে পারে। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে আর ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে গেলে তখন পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়।

কোয়ারেন্টাইন: করোনার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার পরে অন্তত সপ্তাহখানেক সে নিষ্ক্রিয় থাকে, কোনও উপসর্গ দেখা যায় না। তাই কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে এলে বা কেউ রোগীর সংস্পর্শে এলে অন্য রোগী বা সংস্পর্শে থাকা মানুষজনের শরীরেও সংক্রমণ হতে পারে। যেহেতু এটি সংক্রামক রোগ, তাই ছোঁয়াচেই বিপদের সম্ভাবনা বেশি। তবে যে কোনও হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন করা হয় না। ব্যক্তিকে সরকারি কোনও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ১৪ দিন রাখা হয়। যেমন এখানে রাজারহাটে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে করা হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার।

হোম কোয়ারেন্টাইন: কোনও ব্যক্তি যখন নিজের বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনের সব নিয়ম মেনে, বাইরের লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে আলাদা থাকেন, তখন তাকে হোম কোয়ারেন্টাইন বলে। কারোর নিজের শরীর বিন্দুমাত্র খারাপ মনে হলে এই পরিস্থিতিতে তিনি হোম কোয়ারেন্টাইন পন্থা অবলম্বন করতেই পারেন। হোম কোয়ারেন্টাইনের ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে হাতে স্ট্যাম্প দিয়ে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *