রাজেন রায়, কলকাতা, ২১ জানুয়ারি: বিজেপি শাসিত রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা অনেক বেশি নিরাপদ এমন দাবি বারবারই করে এসেছে রাজ্য। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে হাথরাসের ভয়াবহ ধর্ষণকাণ্ডের পরেও প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এমনটাই দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ পরিদর্শনের সময় মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট দিল নবান্ন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা কমেছে অনেকটাই।
রিপোর্টে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, নারী পাচারের মতো বিভিন্ন অপরাধের কথা উল্লেখ করে তথ্য পেশ করেছে রাজ্য সরকার। বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছিল ৩০ হাজার ৯৯৯টি, মাত্র এক বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৩৯৪। ২০১৯ সালে ভারতের ৮টি রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটা সম্মিলিত অপরাধের হার ছিল পশ্চিমবঙ্গের থেকে বেশি। উল্লেখ্য, মহিলা নির্যাতনে কেন্দ্রের হিসেবেও শীর্ষে রয়েছে উত্তর প্রদেশ এবং দশম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্বেও রাজ্যে নারী নির্যাতনের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আসরে নেমেছিল বিরোধী দল বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা নিরাপদ নন এমন দাবি রাজ্যে এসে করেছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মা। তিনি আরও দাবি করেছিলেন, এই রাজ্যে মহিলা নির্যাতনের অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে না, উল্টে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে নির্যাতিতাদের। তার প্রত্যুত্তরে রিপোর্ট পেশ করে সরকারের দাবি, প্রতিবছর ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের হার কমছে বাংলায়। সেইদিক থেকে দেশের ২৩টি রাজ্যের তুলনায় মহিলারা বেশি নিরাপদ পশ্চিমবঙ্গেই। এমনকী, ধর্ষণের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, নারী পাচারের ক্ষেত্রেও গ্রাফ নিম্নমুখী। রিপোর্টের একেবারে শেষে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তাও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে নারী নির্যাতন নিয়ে যাতে বিরোধীরা প্রশ্ন না তুলতে পারে, তার জন্য রীতিমতো আটঘাট বেঁধে এদিন কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠাল রাজ্য প্রশাসন।