অভিযুক্ত অধ্যাপককে ছুটিতে পাঠালো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৬ ফেব্রুয়ারি:
ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ফিজিক্সের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র জানাকে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে পাঠালো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবারই তাকে পেশ হতে হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাল কমপ্ল্যান্ট কমিটি বা সংক্ষেপে আইসিসির কাছে। সেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ বলে সাফাই দিয়েছিলেন ওই অধ্যাপক। এদিকে অভিযুক্ত অধ্যাপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছে।

ছাত্র ঐক্যর নামে ছাত্রছাত্রীরা এদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিল করার পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভও করেন। যদিও ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনকে বেআইনী বলেছেন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, আইন মোতাবেক সমস্ত পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তা সত্বেও আন্দোলন কিসের সেই প্রশ্নও তিনি তুলেছেন। এদিন ডিএসও এবং এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়।

ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, চারমাস আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও বিভাগের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। এবার ফিজিক্স বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের এক ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেওয়া এবং সেই প্রস্তাব না মানায় তাকে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় অধ্যাপক পরেশবাবুর বিরুদ্ধে। যদিও পরেশবাবু একে ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ করা যেতে পারে ইউজিসির গাইডলাইন অনুসারে মহিলাদের যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্ত করে ইন্টারন্যাল কমপ্ল্যান্ট কমিটি বা সংক্ষেপে আইসিসি। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও তদন্ত করছে আইসিসি। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। এবার ফের একই ঘটনা ঘটেছে। কতদিন এভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হবে। পাল্টা সেই প্রশ্ন তারা ছুঁড়ে দিয়েছেন উপাচার্যর দিকে।

উপাচার্য রঞ্জনবাবু বলেছেন, যথারীতি সংসদে আইন মোতাবেক স্বশাসিত কমিটি আইসিসি গঠিত হয়েছে। যা কারও অধীনে নয়। ফলে সেই কমিটি কিভাবে তদন্ত করবে তা পুরোপুরি তাদের বিষয়। গত নভেম্বরের মাইক্রোবায়োলজির অভিযুক্ত অধ্যাপকের ঘটনার তদন্তরিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা করে দিয়েছে আইসিসি। আগামি ৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে। এদিকে ফিজিক্স বিভাগেও অভিযোগ পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য আইসিসির কাছে পাঠানো হয়েছে। তারা তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে ছুটিতেও পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে যা যা করনীয় সবই করা হয়েছে। তা সত্বেও ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নেমেছেন। সবার উপরে থাকা আইসিসিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলন সম্পূর্ণ বেআইনী। অবিলম্বে তাদের বিষয়টি বোঝা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *