আমাদের ভারত, ৩১ মার্চ: তৃণমূল প্রার্থীর সামনেই দলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ দুর্গাপুরের আমরাই গ্রামে। দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চোখের সামনে মারপিট করতে দেখে কোনো ক্রমে মন্দিরে ঢুকে প্রাণ বাঁচালেন তৃণমূলের ক্রিকেটার প্রার্থী কীর্তি আজাদ। পাশের স্থানীয় একটি মন্দিরে ঢুকে অসুস্থও হয়ে পড়েন তিনি বলে জানা যায়। পরে অবশ্য তিনি এই ঘটনাকে গোষ্ঠী সংঘর্ষের বদলে অতি উৎসাহ বলে দাবি করেছেন।
ঠিক ছিল রবিবার সকালে বর্ধমান- দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ মিছিল করে আমরাই এলাকায় প্রচার শুরু করবেন। তার আগে তাঁকে সম্বর্ধনা জানানোর জন্য তৈরি ছিল একদল তৃণমূলের কর্মী সমর্থক। ঠিক তখনই আর একদল তৃণমূল কর্মী সমর্থক সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রার্থীর সামনেই শুরু হয়ে যায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর হাতাহাতি ও সংঘর্ষ।
জানা গেছে, এই সংঘর্ষের একদিকে ছিল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বহিষ্কৃত নেতা শেখ শাহাবুদ্দিনের দলবল। অন্যদিকে ছিল
বর্তমান শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় ও শেখ আমিরুল রহমানের দলবল।
কিন্তু এই পুরো ঘটনাকে চুড়ান্ত কটাক্ষ করেছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার। কীর্তি আজাদের ছক্কা মারার মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই পাল্টা দেন পঙ্কজ রায় সরকার। তাঁর কথায়, এটাই তৃণমূল প্রার্থীর বলে বলে ছক্কা মারা। ব্যালট বক্সে শেষ পর্যন্ত ছক্কা খেতে হবে এদের। তাঁর দাবি, সবটাই আসলে কাটমানির ভাগ কে দখলে রাখবে তার খেলা। তিনি বলেন, “প্রথম বলেই ছক্কা হয়েছে। অপেক্ষা করুন, ব্যালট বক্সে শেষ পর্যন্ত ছক্কা খেতে হবে এদের। এই সমস্ত কিছুর আধার হচ্ছে টাকা পয়সা। তৃণমূলের প্রার্থী যাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন তাদেরকে কি আদৌ উনি চেনেন? উনি তো বিজেপি থেকে তৃণমূলে এসেছেন।”
তাঁর দাবি, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন বলে কিছু নেই, যেটা আছে সেটা হচ্ছে টাকা তোলার সংগঠন। এটা হচ্ছে শ্রমিকদের শোষণ করে এবং ম্যানেজমেন্টের থেকে খাম পাওয়ার লড়াই। সাড়ে ৩ হাজার ঠিকা শ্রমিক উচ্ছেদ করে দিয়ে নিজেদের লোক ঢুকিয়েছে এরা। তবে নিজেদের লোক মানে তৃণমূলের কর্মী নয়, যারা টাকা দিয়েছিল তাদের ঢোকানো হয়েছে। এর পরেও শ্রমিকরা যা পেমেন্ট পান তৃণমূলের নেতারা তার থেকে ৩০ – ৪০ শতাংশ কেটে নেয়। তাই এটা কয়েকশো কোটি টাকার খেলা। সেটা কি কখনো কেউ ছেড়ে দেবে?”
যদিও এই সংঘর্ষকে প্রার্থীকে কাছে পাওয়ার জন্য কর্মী সমর্থকদের অতি উৎসাহ বলে পরে দাবি করেছেন তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ। তাঁর কথায়, কোনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নয়, তৃণমূলের কর্মীরা কে আগে তার কাছে আসতে পারবেন তা নিয়ে সমস্যা হয়। তাই এটাকে অতি উৎসাহ বলে। তবে ওই ঘটনার পর তিনি পাশের একটি মন্দিরে ঢুকে পড়েন। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন তিনি। জানা যায়, এই ঘটনার জেরে কীর্তি আজাদ অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন।